আন্তর্জাতিক

‘চীন মোকাবিলায়’ নতুন জোট বাইডেনের, নেই ভারত

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদারে নতুন একটি ত্রিদেশীয় জোট গড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি মূলত চীনের প্রভাববৃদ্ধি মোকাবিলা করতেই যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যকে নিয়ে এ জোট গড়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নতুন জোটের নাম দেওয়া হয়েছে এইউকেইউএস। এর আগে কোয়াড নামে পরিচিত প্রায় একই ধরনের একটি জোট গড়েছিলেন বাইডেন, তাতে যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ছিল ভারত ও জাপান। তবে নতুন জোটে জায়গা হয়নি এশীয় দেশ দুটির।

Advertisement

জোটের চুক্তি অনুসারে, অস্ট্রেলিয়াকে নিউক্লিয়ার সাবমেরিন (পারমাণবিক শক্তি পরিচালিত ডুবোজাহাজ) তৈরিতে সাহায্য করবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তবে সেই সাবমেরিনে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র থাকবে না বলে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধ চুক্তিতে (এনপিটি) আগে থেকেই সই রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যৌথভাবে নতুন জোটের ঘোষণা দেন। বাইডেন বলেন, এর মাধ্যমে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ নিলো দেশ তিনটি।

হোয়াইট হাউস থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা সবাই দীর্ঘমেয়াদে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার অপরিহার্যতা স্বীকার করছি। এ অঞ্চলের বর্তমান কৌশলগত পরিবেশ এবং এটি কীভাবে বিকশিত হতে পারে তা পরিচালনায় সক্ষম হতে হবে আমাদের। কারণ আগামীতে আমাদের প্রতিটি জাতির ভবিষ্যৎ, প্রকৃতপক্ষে গোটা বিশ্বের স্থায়ী সমৃদ্ধি নির্ভর করছে একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর।

Advertisement

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বরিস জনসন এবং স্কট মরিসনও। অবশ্য তিন নেতার কেউই সরাসরি চীনের নাম উল্লেখ করেননি।

তবে এই জোট ঘোষণার পরপরই ওয়াশিংটনে চীনে দূতাবাসের মুখপাত্র বলেছেন, ওই তিন দেশের উচিত ‘স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতা ও আদর্শগত কুসংস্কার’ ঝেড়ে ফেলা। এটি অন্য দেশের স্বার্থকে লক্ষ্য করে গড়া ‘বাধাদানকারী জোট’ উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

বিগত কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ চীন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরির মাধ্যমে ওই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং। ঐতিহাসিকভাবে সাগরটির বেশিরভাগ অংশ নিজেদের বলে দাবি করে তারা। এ জন্য সেখানে কোস্টগার্ড ও নৌসেনাও মোতায়েন করেছে চীনারা। উত্তেজনা রয়েছে তাইওয়ান প্রণালীতে। দুই কোরিয়ার মধ্যে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতাও দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ।

দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ানের কাছে নিয়মিত ‘নৌ চলাচলের স্বাধীনতা’ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের নৌবাহিনীও এই অঞ্চলে তৎপরতা বাড়িয়েছে। তবে মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এইউকেইউএস কোনো দেশকে লক্ষ্য করে তৈরি হয়নি।

Advertisement

এর আগে, এ অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে ভারত ও জাপানকে সঙ্গে নিয়ে তথাকথিত কোয়াড জোট গঠন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে তাদের পরবর্তী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এতে অংশ নেবেন কোয়াডভুক্ত দেশগুলোর সরকারপ্রধানরা। তার আগেই নতুন জোটের ঘোষণা সামনে এলো।

সূত্র: আল জাজিরা

কেএএ/জিকেএস