খেলাধুলা

তাসকিনের ‘দুঃস্বপ্নের’ ঘোর কাটানোর মিশন

বিশ্বকাপ সবার জন্যই স্বপ্নের আসর। তবে বাংলাদেশের ফাস্ট বোলার তাসকিনের কাছে বিশ্বকাপ ‘রীতিমত দুঃস্বপ্ন’। কেন যেন এ সুঠাম দেহী দ্রুতগতির বোলারকে বিশ্বকাপ ঠিক ‘স্যুট’ করে না। বিশ্বকাপ নামক মহা আসরটি বরাবরই তাসকিনের জন্য দূর্ভাগ্যের ক্ষেত্র বলেই পরিগণিত হয়েছে।

Advertisement

২০১৪ সালের ১৪ জুন ঢাকার শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে একদিনের ম্যাচে অবিস্মরণীয় অভিষেকের (২৮ রানে ৫ উইকেট) পরপরই তাসকিন পেয়ে যান অন্যরকম খ্যাতি। সবাই জেনে যায় বাংলাদেশ এক এক্সপ্রেস বোলার পেয়ে গেছে। যার বল আগুন ছড়ায়।

কিন্তু হায়! ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বছর (২০১৫ সালে) অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেললেও ২০১৬’তে প্রথম ওয়ানডে প্রতিপক্ষ সেই ভারতের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে গিয়ে মাঠে নামার আগে বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরম্যাটের বিশ্বকাপে মাঠে নামা হয়নি তাসকিনের। এরপর ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের আগে ইনজুরির শিকার হয়ে স্কোয়াডেই জায়গা পাননি।

কাজেই তাসকিনের কাছে বিশ্বকাপ মানেই দুঃখ, কষ্ট আর যন্ত্রনার অপর নাম। খেলতে না পারার বেদনা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এলেই তার মনটা বিষাদে ভরে যায়। কারণ ফর্মের চুড়ায় থাকা অবস্থায় ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা হয়নি।

Advertisement

সবকিছু ঠিক থাকলে এবার ওমান ও আরব আমিরাত যাচ্ছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে। চোখে-মুখে তাই নতুন স্বপ্ন। ভাল কিছু করার অন্যরকম তাড়না।

২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সে দুঃখজনক স্মৃতি এখনো পোড়ায়। কেমন অনুভব হয়? আজ সে প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তাসকিন। বুধবার শেরে বাংলায় সেই স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাসকিন শুধু দুটি কথাই বলেছেন।

‘আসলে সত্যি কথা বলতে দুইটা স্মৃতিই আলাদা আলাদা। একেকটা একেক রকম। তবে যেগুলো অতীত, তা নিয়ে আর বেশি ভাবতে চাই না। বর্তমানেই নজর দিতে চাই। সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখে আর ভালো করতে পারি।’

এবার টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়ে তাই অনেক খুশি তাসকিন। তাইতো মুখে এমন কথা ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি অনেক খুশি যে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছি এবার।’

Advertisement

শুধু স্কোয়াডে জায়গা পাওয়াই নয়, তাসকিনের আশা এবং এ দ্রুত গতির বোলার রীতিমত রোমাঞ্চিত। তার স্থির বিশ্বাস, এবার তার সুযোগ হবে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে ওঠার এবং সেখানে নিজেকে মেলে ধরতে মুখিয়ে আছেন। সুযোগ পেলে সামর্থ্যের সেরাটা দিতেও প্রাণপন চেষ্টা করবেন, ‘আমি খুব এক্সাইটেড যে খেলতে পারবো ইনশা আল্লাহ, আল্লাহ যদি নেয়।’

নিজেই মানছেন শেরে বাংলার স্লো উইকেটের কারণেই অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে তার সুযোগ হয়েছে খুব কম। সে বোধ থেকেই এমনটা বলা, ‘যদিও কন্ডিশনের কারণে লাস্ট দুইটা টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পারিনি; কিন্তু শেষ একটা ম্যাচ খেলা হয়েছে। প্রস্তুতি অনুযায়ী ওটিস গিবসন ও টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে কাজ করা হচ্ছে। প্রস্তুতির জন্য ওখানে গিয়েও আমরা বেশ কিছু সময় পাবো। ইনশা আল্লাহ আমার বিশ্বাস, আমরা ভালো কিছু করতে পারবো, করা সম্ভব আমাদের দলের।’

শেরে বাংলার স্লো ও লো পিচ থেকে ওমানের মাসকাট এবং আরব আমিরাতের (দুবাই , শারজা আর আবুধাবি) তিন ভেন্যুর পিচে মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে- বলে অনেকেরই ধারনা। তাসকিন তা মানতে নারাজ। তার ব্যাখ্যা, ‘আসলে প্রস্তুতির জন্য আমরা ১০ দিন সময় পাচ্ছি এবং কিছু প্র্যাকটিস ম্যাচও পাবো, হয়তো তিনটার মত।’

তার শেষ কথা , আমাদের যে রকম কন্ডিশনই হোক সে রকম পরিকল্পনা প্রয়োগ করতে হবে। যখন কাটার কম ধরে তখন ইয়র্কার বা লেংথ বলের প্রয়োগটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই আইসিসি ইভেন্ট, মাথায় থাকবে ফ্ল্যাট ট্র্যাক বা স্পোর্টিং উইকেট হবে। চ্যালেঞ্জিং হবে বোলারদের জন্য। তবে একই সময়ে প্রয়োগটা ভালোভাবে করতে পারলে ভালো করার সুযোগও থাকবে।’

এআরবি/আইএইচএস