সালতামামি

ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি হেফাজত : ঐক্যে ধরেছে ফাটল

‘নাস্তিক` ব্লগারদের ফাঁসি, ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা বন্ধসহ ১৩ দফা দাবি আদায়য়ের আন্দোলনের জন্য বছর ধরে চেষ্টা করেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বহুল আলোচিত-সমালোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ। উল্টো ফাটল ধরেছে দলের ঐক্যে। ফলে সাংগঠনিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়েছে হেফাজত । যদিও বছর জুড়েই হেফাজত নেতাদের দাবী ছিল যে কোন সময় ঘুরে দাঁড়ানোর।   এদিকে, যে চট্টগ্রাম থেকে তাদের উত্থান, সেই চট্টগ্রামেই এখন কার্যক্রম অনেকটা স্তিমিত। মূল আস্তানা হাটহাজারীতেও নেই সেই প্রভাব। ঢাকা অফিসের সঙ্গেও  সম্পর্ক প্রায় ছিন্ন। জানা গেছে, শাপলা চত্বরের ঘটনায় হেফাজতের তৈরি  মৃত তালিকার মানুষ জীবিত ফিরে আসা ও নায়েবে আমিরের মাদ্রাসায় গ্রেনেড বিস্ফোরেণসহ কয়েকটি ঘটনা বিধ্বস্ত করে দিয়েছে দলের সাংগঠনিক ভিত্তি। ফলে বছরজুড়ে লক্ষ্য করা যায়নি হেফাজতের হুমকি-ধমকি।এ প্রসঙ্গে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, সরকারের হামলা মামলার কারণে একেক হুজুর ১২ থেকে ২৪ মামলার আসামি।এসব মিথ্যা  মামলায় তাদের হয়রানিও করা হচ্ছে । তাই সাংগঠনিকভাবে গুছিয়ে উঠতে একটু সময় নিচ্ছি আমরা।তিনি আরো জানান, মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে রয়েছে ১৭ মামলা। সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীর বিরোদ্ধে রয়েছে প্রায় দুই ডজন মামলা।  অন্য শীর্ষ নেতারাও এক থেকে দেড় ডজন মামলার আসামি।   এদিকে, মামলা ইস্যুতেও বেড়েছে হেফাজতের বিভক্তি। একটি অংশ কৌশলগত কারণে সরকারের সঙ্গে সখ্য গড়ে মামলাগুলো ধামাচাপা দিয়ে রাখার পক্ষে। আরেকটি অংশ চায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিতে। তবে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী। তার পরিবর্তে হাটহাজারীর দারুল উলুম মাদ্রাসা থেকে আমিরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমেদ জানান, বড় হুজুর (আল্লামা শফী) অসুস্থ।অপরদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হেফাজতের বর্তমান আমির শাহ আহমদ শফীর প্রতি সবার আনুগত্য থাকলেও তার অবর্তমানে দলের হাল ধরা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধও চলছে। মজলিসে শূরার একটি অংশ আমির হিসেবে দেখতে চায় শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে। আরেকটি অংশের পছন্দ সংগঠনের বর্তমান মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীকে। আবার তৃতীয় আরেকটি পক্ষ আমির হিসেবে চান দলের প্রভাবশালী নায়েবে আমির মাওলানা মুহিবুল্লাহকে। এ তিন পক্ষের একটি অংশের সখ্যতা জামায়াত ও বিএনপির সঙ্গে। আরেকটি অংশ সুসম্পর্ক বজায় রাখছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে। তাই দলের সাংগঠনিক কর্মসূচি নির্ধারণ করতে গেলেও হেফাজত নেতারা এখন বিপাকে পড়ছেন।  এএম/এএইচ/এমএস

Advertisement