দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের হত্যা যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি মাসের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে সন্ত্রাসীরা বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিকে অপহরণ করে। তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে হত্যাও করা হয়। আবার অনেককে মুক্তিপণের মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় চার বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে।
Advertisement
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) শংকর দাশ নামে এক বাংলাদেশিকে স্থানীয় কৃষ্ণাঙ্গরা শ্বাসরোধে হত্যা করে দোকানের মালামাল এবং নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় চট্টগ্রামের শংকর দাসকে হাসপাতালে ভর্তি করলে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন।
শ্বাসরোধ করে নুরে আলম ভুট্টু নামে এক বাংলাদেশিকে হত্যা করে কৃষ্ণাঙ্গরা। শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল দশটায় দেশটির ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের মাটাটিয়াল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ডাকাতের গুলিতে কোরআনে হাফেজ আব্দুল আহাদ (৩০) নামের এক প্রবাসী বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) নর্থওয়েস্ট প্রদেশের ক্লাসডর্প এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
Advertisement
দেশটির লিম্পোপু প্রদেশে শফিকুল ইসলাম (৫৫) নামে এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে হত্যা করে দোকানের টাকা-পয়সা ও মালামাল লুট করে কৃঞ্চাঙ্গ সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় লিম্পোপু প্রদেশের পলোকোয়ানে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন প্রবাসী জানিয়েছেন, বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন দোকানপাটে হামলা এবং লুটতরাজ প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কেপটাউন, জোহানসবার্গ, প্রিটোরিয়া এবং ব্লুমফন্টেইনে অভিবাসী বিরোধী হামলার শিকার হয়েছেন বহু বাংলাদেশি।
নব্বই এর দশক থেকে বাংলাদেশ থেকে মানুষ দক্ষিণ আফ্রিকায় কাজের সন্ধানে যেতে শুরু করে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে বৈধভাবে এক লাখের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। দেশটিতে এখনো সাদা এবং কালো মানুষদের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য ব্যাপক এবং ভূমির মালিকানা নিয়েও রয়েছে চরম অসন্তোষ।
সেই সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে, স্থানীয়দের মধ্যে বেকারত্বের হার ২৮ শতাংশের বেশি। কর্মসংস্থান না থাকায় কেপটাউন এবং জোহানসবার্গসহ বড় শহরগুলোর অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া দেশটির একটি বড় সমস্যা।
Advertisement
এমআরএম/এমএস