করোনায় গত দেড় বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পটুয়াখালীতে ঝরে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থী। অভাব-অনটনের কারণে শিক্ষাজীবনের ইতি টেনে অনেক শিশু নেমেছে কাজের সন্ধানে। এটি আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
সম্প্রতি পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে কথা হয় ১৬ বছরের কিশোর শফিকের সঙ্গে। গত বছর পর্যন্ত সে কুয়াকাটার চাপলি বাজার ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ট শ্রেণির ছাত্র ছিল। তবে করোনার দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকায় ও পরিবারের আয় কমে যাওয়ায় শফিক এখন কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে বেঞ্চ পাহারার চাকরি নিয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খোলার খবর শফিককে স্পর্শ করেনি। কারণ তার আর শিক্ষাজীবনে প্রবেশ করা হচ্ছে না। পাঁচ হাজার টাকা বেতনে সৈকতের বেঞ্চ পাহারায় স্থায়ী হবে সে।
শুধু শফিকই নয়, করোনাভাইরাসের কারণে অনেককে শিক্ষাজীবনের ইতি টানতে হয়েছে। এদের আরেকজন তৃতীয় শ্রেণির শিশু সুমাইয়া। এসময় তার বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার কথা। কিন্তু সে এখন সমুদ্রসৈকতে মায়ের সঙ্গে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, গত বছর মাধ্যমিক পর্যায়ে জেলায় ঝড়ে পড়ার হার ছিল ২৭.১৫ শতাংশ। দেড় বছর যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ সে কারণে এবার ঝড়ে পড়ার হার কিছুটা বাড়তে পারে। কিন্তু কীভাবে ঝড়ে পড়ার হার নিয়ন্ত্রণ করা যায় পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।
Advertisement
এদিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ছাইয়াদুজ্জামান জানান, গত বছর জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হার ছিল ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে এ সংখ্যা বাড়তে পারে। সে জন্য পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইনে পাঠদান কিংবা অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষাজীবন স্বাভাবিক রাখতে কাজ করা হয়েছে।
আরএইচ/এএসএম