ইশতিয়াক আহমেদ
Advertisement
ভ্রমণপিপাসুদের জন্য চট্টগ্রামের মীরসরাই যেমন আকর্ষণীয় তেমনি অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়দের পছন্দের তালিকায় শীর্ষস্থানীয় একটি স্থান। পাহাড়, সমুদ্র, বীচ, মন্দির, ঝর্ণা, ট্রেইল, ট্রেকিং ঝিরিপথ, কৃত্রিম লেক- কী নেই এখানে!
আর মজার ব্যাপার হলো, একদিনেই আপনি মহামায়া লেক ভ্রমণ করতে পারবেন তাও আবার খুব কম খরচে। দেশের অন্যতম নবীন কৃত্রিম লেক হলো মহামায়া। ১৯৯৯ সালে মহামায়া খালের ওপর স্লুইস গেট স্থাপনের মাধ্যমেই এর সৃষ্টি।
চট্টগ্রাম জেলা সদর থেকে ৬০ কিলোমিটার উত্তরে মীরসরাই উপজেলার অবস্থান। মুহুরি নদী ফেনী ও নোয়াখালী জেলা থেকে এটিকে আলাদা করেছে। একে চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বারও বলা যায়। মীরসরাইয়ের ঠাকুরদিঘির পাড়ের ঠিক উল্টো পাশের রাস্তাকেই রাবার ডেম বলে।
Advertisement
সেখান থেকে সিএনজিতে করে চলে যাবেন মহামায়া ইকো পার্কের গেটে। ভাড়া জনপ্রতি ১৫ টাকা। অথবা হেঁটে হেঁটেও যেতে পারেন। এতে আশেপাশের এলাকা দেখতে দেখতে যেতে পারবেন।
হেঁটে যেতে ১৫ মিনিট সময় লাগবে। গেট থেকে ইকো পার্কে প্রবেশের জন্য টিকেট কাটুন। জনপ্রতি টিকিট পড়বে ২০ টাকা। ইকো পার্কে প্রবেশ করতেই চারদিকের সবুজের নিপোবনে নিজেকে আবিষ্কার করে এক স্বর্গীয় অনুভূতি অনুভব করবেন।
এর আশেপাশে মাঝারি উচ্চতার পাহাড়ের দেখা মিলবে। মাঝখান দিয়ে চলে গেছে মহামায়া লেকে যাওয়ার রাস্তাটি। এই রাস্তা ধরে ১০ মিনিট হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন কাঙ্ক্ষিত মহামায়া লেকে মহামায়া লেকের রূপবৈচিত্র্য সম্পর্কে যতই বলি না কেন, নিজ চোখে না দেখলে সেটা আসলে বোঝানো সম্ভব না।
যেন কোনো শিল্পীর সুনিপুণ হাতের রং-তুলি দিয়ে আঁকা ছবির ক্যানভাস। এতটাই সুন্দর চারদিকে। হালকা সবুজাভ স্বচ্ছ পানি, পানির উপর চারদিকের সবুজ পাহাড়ের প্রতিচ্ছবি, অসাধারণ প্রতিটি দৃশ্য। বর্ণনাতীত সেই অনুভূতি। লেকের পাড়ের নির্মল আর বিশুদ্ধ বাতাস আপনার শরীর ও মনকে মুহূর্তেই সতেজ করে তুলবে।
Advertisement
মূলত এ এলাকার জলাবদ্ধতা, পাহাড়ি ঢল নিরসন ও শুষ্ক মৌসুমে কৃষিখাতে সেচ সুবিধার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড মহামায়া সেচ প্রকল্প চালু করেন। এর অংশ হিসেবে ১৯৯৯ সালে উক্ত মহামায়া খালের ওপর স্লুইস গেট স্থাপন করে। এভাবেই সৃষ্টি হয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক মহামায়া।
মিরসরাই উপজেলার ৮ নম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘীর বাজার থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে তোলা হয়েছে মহামায়া লেক। ১১ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এটি অবস্থিত।
মূলত এটি একটি সেচ প্রকল্প। রাঙামাটির কাপ্তাই লেকের পরে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ লেক এটি। এই মহামায়া প্রকল্পে আছে লেক, পাহাড়, ঝর্ণা ও রাবার ডেম।
এবার ফেরার পালা। ফিরতে মন চাইবে না, তবুও ফিরতে হয়। তবে ভ্রমণের সময় অবশ্যই পরিবেশের ক্ষতি করবেন না। নয়তো প্রকৃতি সেই ক্ষতি ফিরিয়ে দেবে, দ্বিগুণ আকারে।
জেএমএস/এমএস