বরিশাল নগরীর তিনটি স্থানকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সিটি করপোরেশন। এসব এলাকায় হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ হলেও মানছেন না চালকরা। এছাড়া বাজানো হচ্ছে মাইক ও সাউন্ড বক্সও। তাই শব্দদূষণ রোধে জনগণকে সচেতন করতে প্রচার অভিযানে নেমেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ওই তিন প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ করে প্রচারণা চালানো হয়।
এ বিষয়ে শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তোতা মিয়া বলেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও আবদুর রব সেরনিয়াবাত আইন মহাবিদ্যালয় (ল’ কলেজ) সংলগ্ন আশপাশের ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা রয়েছে। প্রায় ছয় মাস আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুরোধে বরিশাল সিটি করপোরেশন ওই তিনটি স্থানকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট আকারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তাই জনসাধারণকে সচেতন করতে প্রচার অভিযান চলছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী দুমাস প্রচার অভিযান চালানো হবে। এরমধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি, যানবাহন চালক ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হবে। এরপর আইনের প্রয়োগ করা হবে। শব্দ দূষণে দোষী হিসেবে প্রমাণিত হলে প্রথম অপরাধের জন্য একমাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা দু ধরনের দণ্ডই প্রদান করার বিধান রয়েছে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেওয়ার কথা বলা রয়েছে। আইন ভঙ্গ করলে শব্দের উৎস যন্ত্রপাতি জব্দ করা যাবে। বিধিমালায় যেসব উল্লেখ করা রয়েছে তা পালনে ব্যর্থতাকে অপরাধ হিসেবে ধরা হবে।
Advertisement
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী মো. রফিকুল আলম বলেন, শব্দ দূষণকে বলা হয় নীরব ঘাতক। আর বিশেষ করে বরিশাল নগরীতে শব্দ দূষণের বহু উৎস রয়েছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। গাড়ির হর্ন, নির্মাণকাজ, মাইকের ব্যবহার, ছোট কারখানায় শব্দ দূষণ বিষয়ে যেসব নিয়ম রয়েছে তা মানা হচ্ছে না। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের এ প্রচারণা কর্মসূচি জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াবে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও নাক কান গলার রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এসএম সরোয়ার জানান, লম্বা সময় অতিরিক্ত শব্দের মধ্যে থাকার কারণে হাইপার টেনশন, আলসার, হৃদরোগ, মাথাব্যথা, স্মরণশক্তি হ্রাস, স্নায়ুর সমস্যা ও মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কান। অতিরিক্ত শব্দের মধ্যে দীর্ঘদিন কাটালে শ্রবণ শক্তি ধীরে ধীরে কমে যাওয়া এমনকি বধির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
সাইফ আমীন/এসজে/এএসএম
Advertisement