করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক ক্লাস কার্যক্রম শুরু করা হবে। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস নেওয়া হবে। অন্যদের সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস নেওয়া হবে। সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে এ-সংক্রান্ত আলাপচারিতায় কথাগুলো বলেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
Advertisement
তিনি বলেন, আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। প্রতি সপ্তাহের পরিস্থিতি মনিটরিং করা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধীরে ধীরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম নিয়মিত করা হবে।
মহামারিকালে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে- উল্লেখ করে উপমন্ত্রী বলেন, যেসব শিক্ষার্থী প্রাথমিক থেকে মধ্যমিক, মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে, আমরা তাদের অধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। সেইসঙ্গে কারিগরি স্তরের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক বিষয় বেশি থাকায় তাদের নিয়মিত ক্লাস শুরু করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন সকল বিষয়ে ক্লাস নেয়া হবে।
কড়া নির্দেশনা থাকলেও কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ ঢিলেঢালাভাবে চলছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষে সব জায়গায় নজরদারি করা সম্ভব নয়। জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শে আমরা একটি গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছি, সে মোতাবেক সবাই স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাঠদানের জন্য উপযোগী করে তুলবেন। নির্দেশনা মোতাবেক সবাইকে শ্রেণি ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
Advertisement
কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে গেলে কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে- জানতে চাইলে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, স্কুল-কলেজ খোলার পর আবারো যদি সংক্রমণ বেড়ে যায়, তবে সরকারের সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা চাই না, আবারো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হোক। সেজন্য আমাদের কড়া নজরদারি থাকবে।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে এক ধরনের আশঙ্কা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হচ্ছে। অন্য সব প্রতিষ্ঠান চললে শুধু স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার কোনো কারণ নেই। বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক কম। সেসব বিবেচনায় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাসে পাঠদান শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হওয়ার পর গত বছরের ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। প্রথমে সাত দিনের জন্য এ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলেও করোনা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির মুখে পরে দফায় দফায় বাড়ানো হয় এ ছুটি। এরইমধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে সংসদ টিভি, কমিউনিটি রেডিও ও অনলাইন মাধ্যমে শিক্ষকদের রেকর্ডকৃত ক্লাস সম্প্রচার করা হলেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে অনেক শিক্ষার্থী তাতে সংযুক্ত হতে পারেনি। এরপর ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ার টেবিলে রাখতে সপ্তাহভিত্তিক অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম শুরু করা হয়। সেখানে অধিকাংশ শিক্ষার্থী যুক্ত হলেও অন্যকে দিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট করানোসহ নানা ধরনের অভিযোগ উঠে। লম্বা ছুটির পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনসহ ১১টি নির্দেশনা জারি করেছে মাউশি। সেসব নির্দেশনা মেনে আপাতত সংক্ষিপ্ত আকারে ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়েছে।
Advertisement
এমএইচএম/এমকেআর/জেআইএম