আফগানিস্তানে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বীকৃতি না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তালেবানের বিরোধীরা। গত মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) নতুন অস্থায়ী সরকার ঘোষণা করে তালেবান। এদিকে আফগানিস্তানে তালেবানের বিরোধীরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন এই নতুন সরকারকে স্বীকৃতি না দেয়। খবর বিবিসির।
Advertisement
তালেবানের নতুন সরকারে কোনো নারীকে রাখা হয়নি বলে এরইমধ্যে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সমালোচনা করেছে। মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দকে প্রধানমন্ত্রী করে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা করা হয়েছে। আলোচিত নেতা আব্দুল গানি বারাদার হচ্ছেন তার উপ-প্রধানমন্ত্রী। ঘোষণা হওয়া গুরুত্বপূর্ণ ৩৩টি পদেই রয়েছেন তালেবান ও তার সহযোগী গোষ্ঠীর সদস্যরা, যাদের অনেকের নাম রয়েছে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকায়, রয়েছেন ওয়াশিংটনের নজরে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ আসামিও।
নতুন অস্থায়ী সরকারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, (আফগানিস্তানে) ঘোষিত নামের তালিকায় কেবল তালেবান সদস্য বা তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা রয়েছেন এবং কোনো নারী নেই। আমরা (এদের মধ্যে) কিছু লোকের অন্তর্ভুক্তি ও অতীত ইতিহাস নিয়েও উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, আমরা বুঝতে পারছি, এটিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে উপস্থাপন করেছে তালেবান। তবে, আমরা তাদের কথায় নয়, কাজ দিয়েই বিচার করবো।
এদিকে রাজধানী কাবুলের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত পঞ্জশির উপত্যকায় তালেবান বিরোধী যোদ্ধারা নতুন এই সরকারকে অবৈধ বলে উল্লেখ করেছে। তারা বলছে, আফগান জনগণের সঙ্গে এটা স্পষ্টই তালেবানের শত্রুতার ইঙ্গিত প্রকাশ করছে। এর আগে তালেবান জানিয়েছে, তারা ন্যাশনাল রেজিসটেন্স ফ্রন্টকে (এনআরএফ) পরাজিত করে পঞ্জশির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। কিন্তু এনআরএফ বলছে, তারা এখনও যুদ্ধ করছে।
Advertisement
অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় উপপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন মৌলভী আব্দুল সালাম হানাফি। অপরদিকে এই সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমির খান মুক্তাকীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী করা হয়েছে মোহাম্মদ ইয়াকুবকে। তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে ইয়াকুব এতদিন এই গোষ্ঠীর সামরিক কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মোল্লাহ মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতার ছেলে সিরাজুদ্দিন হাক্কানি এখনো যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ আসামির তালিকায় রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে মোটা অংকের পুরস্কারও।
এফবিআইয়ের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, সিরাজউদ্দিন হাক্কানিকে গ্রেফতার করা সম্ভব এমন তথ্য দিতে পারলে এক কোটি ডলার (৮৫ কোটি টাকা প্রায়) পর্যন্ত পুরস্কার দেবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এফবিআইয়ের বিশ্বাস, সিরাজ হাক্কানি পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে রয়েছেন। তার সঙ্গে তালেবান ও আল-কায়েদার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।
এদিকে তালেবানের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন মৌলভী আমির খান মুত্তাকি। এছাড়া অর্থমন্ত্রী হিসেবে মোল্লাহ হিদায়াত বাদরি, আইনমন্ত্রী আব্দুল হাকিম ইশাকজাই এবং তথ্যমন্ত্রী হিসেবে খাইরুল্লাহ সাইদ ওয়ালি খাইরখার নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
Advertisement
টিটিএন/জেআইএম