ইসলামি শরিয়তে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য গায়রে মাহরামের সঙ্গে পর্দা করা ফরজ। পর্দার সঙ্গে মাহরাম ও গায়রে মাহরামের সম্পর্কের বিষয়টি জড়িত। নারী-পুরুষ পরস্পর যাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ বৈধ তারা মাহরাম। আর যেসব নারী-পুরুষের দেখা-সাক্ষাৎ বৈধ নয় বরং হারাম, বাধ্যতামূলক পর্দা করতে হয়; তারা গায়রে মাহরাম। তাহলে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য মাহরাম এবং গায়রে মাহরাম কারা?
Advertisement
আলাদা আলাদাভাবে নারীর মাহরাম-গায়রে মাহরাম এবং পুরুষের মাহরাম ও গায়রে মাহরমদের পরিচিতি তুলে ধরা হলো-
পুরুষের জন্য মাহরাম : পুরুষরা যেসব নারীর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবেন; তারা হলেন-১. দাদি২. মা/দুধ মা৩. বোন/দুধ বোন৪. শাশুড়ি৫. স্ত্রী৬. মেয়ে/দুধ মেয়ে/সৎ মেয়ে৭. ছেলে/দুধ ছেলের স্ত্রী৮. ফুপু৯. খালা১০. ভাই/বোনের মেয়ে (ভাতিজি/ভাগ্নি)১১. নানি
পুরুষের জন্য গায়রে মাহরাম : পুরুষরা যেসব নারীর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবেন না; তারা হলেন-১. মায়ের খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো বোন২. চাচাতো বোন৩. ভাবি৪. বাবার খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো বোন৫. চাচি৬. ফুপাতো বোন৭. খালাতো বোন৮. মামাতো বোন৯. শ্যালক/শ্যালিকার মেয়ে (স্ত্রীর (ভাতিজি/ভাগ্নি) ভাই-বোনের মেয়ে)১০. শ্বশুর/শাশুড়ির বোন (ফুফু শাশুড়ি/খালাশ শাশুড়ি)১১. শ্যালিকা (স্ত্রীর বোন)১২. মামি১৩. স্ত্রীর খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো বোন১৪. স্ত্রীর ভাবি১৫. মেয়ের ননদ১৬. ছেলে/মেয়ের শাশুড়ি
Advertisement
নারীর জন্য মাহরাম : নারীরা যেসব পুরুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবেন, তারা হলেন-১. দাদা২. বাবা৩. ভাই৪. শ্বশুর৫. স্বামী৬. ছেলে৭. নাতি৮. চাচা৯. ভাই/বোনের ছেলে (ভাতিজা/ভাগিনা)১০. নানা১১. মামা
নারীর জন্য গায়ের মাহরাম : নারীরা যেসব পুরুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবেন না; তারা হলেন-১. মায়ের খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো ভাই২. চাচাতো ভাই৩. দুলাভাই (বোনের স্বামী)৪. বাবার খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো ভাই৫. ফুফুর স্বামী (ফুফা)৬. ফুফাতো ভাই৭. খালাতো ভাই৮. মামাতো ভাই৯. ননদের ছেলে১০. শ্বশুর/শাশুড়ির ভাই (চাচা শ্বশুড়/মামা শ্বশুড়)১১. দেবর/ভাসুর (স্বামীর ছোট ও বড় ভাই)১২. ননদের স্বামী (স্বামীর ছোট বোনের স্বামী)১৩. স্বামীর খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুফাতো ভাই১৪. স্বামীর দুলাভাই (স্বামীর বড় বোনের স্বামী)১৫. ছেলের শ্যালক (ছেলের স্ত্রীর ছোট ভাই)১৬. ছেলে/মেয়ের শ্বশুর১৭. খালার স্বামী (খালু)
তবে উপরে উল্লেখিত এসব নারী-পুরুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ বৈধ ও হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোরআনুল কারিমের একটি আয়াতে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাহলো-حُرِّمَتۡ عَلَیۡکُمۡ اُمَّهٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ وَ عَمّٰتُکُمۡ وَ خٰلٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُ الۡاَخِ وَ بَنٰتُ الۡاُخۡتِ وَ اُمَّهٰتُکُمُ الّٰتِیۡۤ اَرۡضَعۡنَکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ مِّنَ الرَّضَاعَۃِ وَ اُمَّهٰتُ نِسَآئِکُمۡ وَ رَبَآئِبُکُمُ الّٰتِیۡ فِیۡ حُجُوۡرِکُمۡ مِّنۡ نِّسَآئِکُمُ الّٰتِیۡ دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ ۫ فَاِنۡ لَّمۡ تَکُوۡنُوۡا دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ ۫ وَ حَلَآئِلُ اَبۡنَآئِکُمُ الَّذِیۡنَ مِنۡ اَصۡلَابِکُمۡ ۙ وَ اَنۡ تَجۡمَعُوۡا بَیۡنَ الۡاُخۡتَیۡنِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًاতোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাদেরকে, তোমাদের মেয়েদেরকে, তোমাদের বোনদেরকে, তোমাদের ফুফুদেরকে, তোমাদের খালাদেরকে, ভাতিজিদেরকে, ভাগ্নীদেরকে, তোমাদের সে সব মাকে যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছে, তোমাদের দুধবোনদেরকে, তোমাদের শ্বাশুড়ীদেরকে, তোমরা যেসব স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছ সেসব স্ত্রীর অপর স্বামী থেকে যেসব কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদেরকে, আর যদি তোমরা তাদের সঙ্গে মিলিত না হয়ে থাক তবে তোমাদের উপর কোনো পাপ নেই এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদেরকে এবং দুই বোনকে একত্র (বিয়ে) করা (তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে)। তবে অতীতে যা হয়ে গেছে তা ভিন্ন কথা। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা নিসা : আয়াত ২৩)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারী-পুরুষকে কোরআনের নির্দেশ মেনে হারাম নির্দেশনা থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Advertisement
এমএমএস/এএসএম