যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ফোবানা সম্মেলনে আয়োজকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। উপস্থিত শিশু ও নারীর সামনে হাতাহারি এই ভিডিও এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে দশটায় সংঘটিত হওয়ার পর নেতারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিন বছর মেয়াদি স্টিয়ারিং কমিটির নির্বাহী সম্পাদক কাজী আজম ও ৩৫তম ফোবানা সম্মেলনের কনভেনার শরাফত বাবু একে অপরকে থাপ্পড় মারেন কথা কাটাকাটির পর।
Advertisement
গত ৩ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ডিসি সংলগ্ন ভার্জির্নিয়া স্টেটের আলিংটনে সিটির ‘হিলটন ক্রিস্টাল সিটি’তে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে কিছু সংগঠন এবং মানুষকে কেন অতিরিক্ত সময় দেয়া হয়েছে এই প্রশ্ন উত্থাপন করেন নির্বাহী সম্পাদক কাজী আজম। কনভেনার শরাফত বাবু তাদের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন কিনা এই প্রশ্নের পরেই তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি এবং মারামারি সংঘটিত হয়। এই মারামারি পেছনে অর্থনৈতিক হিসাবের গরমিল রয়েছে বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টিয়ারিং কমিটির অন্যতম শক্তিশালী এক সদস্য।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, শরাফত বাবু ‘শাটআপ’ ‘শাটআপ’ বলে আজমকে গালি দেন। এর প্রতি উত্তরে আজম ‘ইউ শাটআপ’ বলে বাবুকেও গালি দেন। শরাফত হোসেন বাবু এক পর্যায়ে কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজমকে বা-হাত দিয়ে থাপ্পড় মারেন আর আজম ডান দিয়ে বাবুকে থাপ্পড় দেন। শুরু হয় মারামারি। আজম সমর্থিত কয়েকজন বাবুকে ধাক্কা দিয়ে মাটিয়ে ফেলে দিয়ে লাথি দেন।
Advertisement
‘এরপর পুরো মিলনায়তনে বিক্ষিপ্তভাবে গালাগালি, ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। সেখানে উপস্থিত কয়েকজনকে ‘বাবু ভাই, বাবু ভাই, চুপ থাকেন প্লিজ’ বলতে শোনা যায়। আসিফ বারী টুটুল বলতে থাকেন, ‘চুপ একেবারেই চুপ প্লিজ।’
আজমের পক্ষ নিয়ে আলী ইমাম শিকদার বাবুর দিকে তেড়ে গিয়ে বলেন, হোয়াট ইট থিংঙ্ক এবাউট, এতবড় সাহস হয়ে গেছে। আমাদের দিন শেষ? এই মারামারি, ধাক্কাধাক্কি ও গালাগালি দেখে মিলনায়তনে উপস্থিত দুইশিশুকে আতঙ্কিত হয়ে পড়তে ভিডিওতে দেখা যায়।
অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তখন কে বা কারা ফোনে পুলিশ ডাকেন। কিন্ত এই কলঙ্কময় ঘটনা যাতে বাইরে প্রকাশ না হয়, তার জন্য ‘বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে’ বলে হোটেলের বাহিরে থেকেই পুলিশকে বিদায় দেয়া হয়।
আলী ইমাম শিকদার, শরাফত হোসেন বাবু,কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, মাকছুদুল হকসহ বেশ কয়েকজনকে ধাক্কাধাক্কি, গালাগালি ও মারামারিতে অংশ নিতে ভিডিওতে দেখা যায়।
Advertisement
পরে আসিফ বারী টুটুলের হস্তক্ষেপে এবং জিল্লুর রহমান জিল্লু, শাহ নেওয়াজ, গিয়াস আহমেদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাবে মীমাংসা হলেও, অনুষ্ঠানের শেষ দিন ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভাজন এবং বিভক্তি স্পষ্ট ছিল বলে জানা যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘ফোবানা নিউইয়র্ক গ্রুপ’ এবং ‘ফোবানা নিউইর্য়ক বাহির গ্রুপ’ এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে শরাফত হোসেন বাবু এবং কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তারা কেউ কথা বলতে চায়নি।
এমআরএম/এএসএম