অর্থনীতি

ডাবে চুমুক দিলেই ৮০ টাকা!

একে তো মহামারি করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গুর প্রকোপ, তার ওপর অসময়ে ভ্যাপসা গরম। একসঙ্গে সবকিছুর প্রভাব যেন ডাবের দামেই ভর করেছে। এই সময়ে পোক্ত একটি ডাবের পানিতে চুমুক দিতে গেলেই গুনতে হবে কমপক্ষে ৮০ টাকা।

Advertisement

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আবারও হঠাৎ বেড়েছে ডাবের দাম। একেকটি ডাব বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। পাড়া-মহল্লার চেয়ে কারওয়ান বাজারে দাম কিছুটা কম। সেখানে ৬০ টাকার মধ্যেও ডাব বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে এমন দামে ডাব বিক্রি করছেন তারা। ডাবের মৌসুম শুরু হলেও করোনা ও ডেঙ্গুর পাশাপাশি গরম বাড়ার কারণে বেড়েছে চাহিদা। এ কারণে ডাবের পাইকারি দামই বেশি।

কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে বড় সাইজের ১০০টি ডাবের দাম সাত হাজার টাকা। এছাড়া মাঝারি আকারের ডাব পাঁচ হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। ছোট ডাব চার হাজারে বিক্রি হচ্ছে। এসব ডাবই কয়েক হাত ঘুরে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে এলাকাভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।

Advertisement

কারওয়ান বাজারে দীর্ঘদিন ধরে ডাব বিক্রি করছেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েক মাস থেকেই ডাবের দাম বেশি। এর মধ্যে কখনো বাড়ে, আবার কখনো কমে। এখন বাজার বাড়তি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলা গত মাসের (কার্তিক) শেষ থেকে বাজারে ডাবের মৌসুম শুরু হয়েছে। অগ্রহায়ণ পর্যন্ত ডাবের সরবরাহ বেশি থাকবে। এ কারণে দাম ধীরে ধীরে কমতে পারে।’

মুনজুরুল নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘আগে কখনো একটা ডাব ১০০ টাকায় বিক্রি করিনি। এখন ডেঙ্গু-করোনা এসে দাম বাড়িয়েছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।’

কয়েকজন ক্রেতা বলেন, রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে ডাবের চাহিদা বাড়ার সম্পর্ক আছে। কারণ ডেঙ্গু রোগীকে তরল খাবার বেশি করে খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ডাবের পানির কার্যকারিতা বেশি।

Advertisement

সুজন নামে এক বিক্রেতা বলেন, ‘অন্যান্য বছর এসময় ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে থাকতো ডাবের দাম। কিন্তু এখন সর্বনিম্ন দাম ৬০ টাকা। মান যদি খুব ভালো হয়, তাহলে ১০০ টাকা ছেড়ে যায়। সাধারণ মানের ডাবও ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

কারওয়ার বাজারের চেয়ে রাজধানীর অন্যান্য মহল্লার দোকানে ডাবের দামে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত পার্থক্য রয়েছে। এ বিষয়ে সাইদুল নামের এক বিক্রেতা বলেন, ‘আমরা বিক্রি করি বেশি, লাভ করি কম। ওইসব দোকানে বিক্রি কম হয় বলে দাম বেশি রাখে। ওরা কয়েক দিন রেখে ডাব বিক্রি করতে পারে। এখানে বাসি ডাব চলে না।’

দীর্ঘদিন ধরে কারওয়ার বাজার থেকে নিয়মিত ডাব কেনেন জয়ন্ত সাহা। তিনি বলেন, ‘কোনো প্রয়োজনীয় খাবারের দাম যদি হঠাৎ করে দ্বিগুণ হয়ে যায় তাহলে খুব সমস্যা। এত দামে কখনো ডাব কিনতে হয়নি।’

এনএইচ/ইএ/এমএস