বিনোদন

৭৭ বছরে পা রাখলেন কিংবদন্তি আবুল হায়াত

বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক আবুল হায়াতের জন্মদিন আজ। এবারে তিনি ৭৭ বছরে পা রাখলেন। ১৯৪৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই কিবদন্তির জন্মদিনে তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসামাখা শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তার ভক্ত-অনুরাগীরা।

Advertisement

১৯৪৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন আবুল হায়াত। তার বাবা আব্দুস সালাম ছিলেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে ওয়াজিউল্লাহ ইন্সটিটিউটের সাধারন সম্পাদক। তার স্কুল জীবন কাটে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট ও রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে মেটৃকুলেশন (বর্তমান এসএসসি) পাস করে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন।

চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আইএসসি পাস করে ১৯৬২ সালে বুয়েটে ভর্তি হন। বুয়েটে পড়ার সময় শেরেবাংলা হলে থাকতেন। এরপর বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট থেকে ১৯৬৭ সালে পাস করে ১৯৬৮ সালেই ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী পদে যোগ দেন।

১৯৬৯ সালে ‘ইডিপাস’ নাটকে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মতো টিভি স্ক্রিনে তার অভিনয়ের অভিষেক ঘটে। তারপর থেকে টিভি নাটকে, সিনেমায় আর বিজ্ঞাপনে সফলতার সাথে অভিনয় করে আসছেন।

Advertisement

জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ রচিত প্রচুর নাটকে তিনি অংশ নিয়েছেন। ‘মিসির আলি’ চরিত্রে অভিনয়টি তার বিশেষ কাজ। এর বাইরে ‘আজ রবিবার’, ‘বহুব্রিহী’, ‘অয়োময়’ ধারাবাহিকগুলোতে আবুল হায়াত ছিলেন অনবদ্য। তার অসংখ্য খণ্ড নাটকও মুগ্ধ করেছে দর্শকদের।

পরিচালনাতেও সফল নাম আবুল হায়াত। বেশ কিছু খণ্ড নাটক নির্মাণ করে তিনি প্রশংসা পেয়েছেন। তার পরিচালনায় ‘জোছনার ফুল’ নাটকটি বিটিভিতে দর্শকপ্রিয় ছিলো। সেখানে অভিনয়ও করেছেন তিনি।

একজন মঞ্চ অভিনেতা হিসেবেও আবুল হায়াত কিংবদন্তি। তার বেশ কিছু নাটক নতুনদের সৃষ্টিশীল অভিনয়ে উৎসাহ দেয়। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য, আসাদুজ্জাম নূরের চিত্রনাট্য ও নির্দেশনায় বিদেশি নাটক অবলম্বনে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ নাটকটি। ১৯৭৮ সালে এতে অভিনয় করে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন এই আবুল হায়াত।

আবুল হায়াত সাহিত্যিক হিসেবেও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার লেখা প্রথম উপন্যাসটি বের হয় ১৯৯১ সালের বই মেলায়। উপন্যাসটির নাম ছিল ‘আপ্লুত মরু’। এরই ধারাবাহিকতায় একে একে বের হয় ‘নির্ঝর সন্নিকট’, ‘এসো নীপ বনে’ (তিন খণ্ড), ‘অচেনা তারা’, ‘জীবন খাতার ফুট নোট’, (দুই খণ্ড) ও ‘জিম্মি’।

Advertisement

আবুল হায়াত ১৯৭০ সালে মেজ বোনের ননদ মাহফুজা খাতুন শিরিনকে বিয়ে করেন। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান বিপাশা হায়াত। ছয় বছর পর জন্ম নেয় নাতাশা হায়াত। তারা দুজনেই শোবিজের জনপ্রিয় মুখ।

বর্তমানে নাতাশা সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বিপাশা চিত্রশিল্পী হিসেবে নিয়মিতই কাজ করছেন। আবুল হায়াতের দুই কন্যার স্বামীরাও অভিনয় ও পরিচালনায় জনপ্রিয় মুখ। তারমধ্যে বিপাশার স্বামী তৌকীর আহমেদ বর্তমানে অভিনয়ের চাইতে পরিচালনাতেই বেশি ব্যস্ত।

অন্যদিকে নাতাশার স্বামী শাহেদ শরীফ খানের অভিনয় খানিকটা অনিয়মিত। তবে ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবিতে তিনি একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

মজার ব্যাপার হলো আজ ৭ সেপ্টেম্বর আবুল হায়াতের নাতনী শ্রীশারও জন্মদিন। শ্রীশা নাতাশা হায়াতের কন্যা। নানা-নাতনির জন্মদিনটা একইদিনে হওয়াতে হায়াত পরিবারে আনন্দটাও হয় দ্বিগুণ।

এলএ/জেআইএম