সব ধরনের ভাইরাসই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের গতিবিধি পরিবর্তন করে। ঠিক যেমন সার্স-কোভিড-২ প্রতিনিয়ত মারাত্মক হয়ে উঠছে- এমনই মত গবেষকদের। ২০২০ সালের শুরুর দিকে যখন করোনাভাইরাস প্রথম চিহ্নিত হয়, তারপর থেকে এটির হাজার হাজার মিউটেশন হয়েছে।
Advertisement
মিউটেশনের মাধ্যমে এভাবে যে পরিবর্তিত ভাইরাস তৈরি হয়, তাকে বলা হয় ভেরিয়েন্ট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বেশিরভাগ মিউটেশনের ফলে ভাইরাসটির মূল গঠনের ওপর খুব কম বা একেবারে কোনো প্রভাবই আসলে পড়ে না। সময়ের সঙ্গে সেটি বিলুপ্তও হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা মূলত করোনার ৪টি ভেরিয়েন্ট নিয়ে চিন্তিত। সেগুলো হলো- আলফা (প্রথম ধরা পড়ে যুক্তরাজ্যে), বেটা (দক্ষিণ আফ্রিকা), গামা (ব্রাজিল) এবং ডেল্টা (ভারত)।
এই ভেরিয়েন্টের কারণেই ভারতে চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে করোনাভাইরাসের মারাত্মক দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। এরপর এটি যুক্তরাজ্যেও প্রাধান্য বিস্তার করে। বিশ্বের ৯০টির বেশি দেশে এই ভেরিয়েন্ট ধরা পড়েছে।
Advertisement
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বা ভিওসি বলে অভিহিত করেছে। করোনাভাইরাসের অন্যান্য স্ট্রেনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রামক হলো ডেল্টা ভেরিয়েন্ট। তবে এগুলোর মধ্যে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট সবচেয়ে মারাত্মক।
ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণসমূহ-
>> করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আবার কেউ কেউ উপসর্গবিহীন হলেও এই ভাইরাসের বাহক হতে পারেন।
>> এই ভেরিয়েন্টের নানা উপসর্গের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ হলো উচ্চ মাত্রায় জ্বর। এটি জানান দেয় যে, আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যান্য রোগ-জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করছে। এর ফলে শরীর ব্যথা ও জ্বর হতে পারে।
Advertisement
>> ডেল্টা ভেরিয়েন্টের আরও একটি লক্ষণ হলো, অস্বাভাবিক কাশি হওয়া। খুশখুশে বা শুষ্ক কাশি হয়ে থাকে এক্ষেত্রে। যদিও কাশির সঙ্গে কফ ওঠে না। তবে মাত্রাতিরিক্ত কাশি হতে পারে।
>> শরীর প্রচণ্ড ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। কোনো কারণ ছাড়া বা পরিশ্রম না করেও যদি আপনি ক্লান্তি অনুভব করেন কিংবা দুর্বল হন সেটিও ডেল্টা ভেরিয়েন্টের উপসর্গ হতে পারে।
>> গন্ধ ও স্বাদ হারিয়ে ফেলতে পারেন করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক স্ট্রেন ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হলে। এটি হতে পারে একটি নিশ্চিত লক্ষণ, যেটি করোনায় আক্রান্ত কমবেশি সব রোগীর মধ্যেই দেখা দিয়েছে।
>> অতিরিক্ত মাথাব্যথাও হতে পারে করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্টের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। তীব্র মাথাব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব ও বমিও হতে পারে এতে আক্রান্ত হলে।
>> করোনা টিকা নেওয়ার পরও আপনি ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হতে পারেন। যদি এমনটি হয় তাহলে দেখা দেয় মাথাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা ব্যথার মতো লক্ষণ, যা সাধারণ ফ্লু’র মতো।
কীভাবে নিরাপদে থাকবেন?
টিকা নেওয়ার পরও মাস্ক পরতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। যদি এখনও কেউ করোনার টিকা না নিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আর দেরি না করে টিকা গ্রহণ করুন। কারণ টিকা নেওয়া থাকলে গুরুতর অসুস্থতা থেকে রক্ষা পাবেন।
সূত্র: বিবিসি/ টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/জেআইএম