দেশজুড়ে

সিরাজগঞ্জে চলছে স্কুলের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশু-কিশোরদের আনন্দ-উল্লাস যেন হারিয়ে গেছে। সকাল বেলা স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীর পতাকা উত্তোলনের সঙ্গে জাতীয় সংগীত, শরীরচর্চা এসব কিছু যেনো করোনার কাছে হার মেনেছে। তবে শিক্ষার্থীদের এই অপেক্ষা পালা শেষ হচ্ছে।

Advertisement

আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ঘোষণায় স্বস্তি ফিরেছে শিক্ষকসহ সব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। এখন চলছে বিদ্যালয়গুলোতে পরিষ্কার-পরিছন্নতার কাজ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ২৭৮টি সরকারি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা শ্রেণিকক্ষ, বেঞ্চসহ আসবাবপত্র পরিষ্কার করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের আশপাশ ও মাঠে জমে থাকা আগাছাও পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে রঙয়ের কাজ করতেও দেখা যায়। বন্যার পানি বাড়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলো পানিতে ভাসছে। স্কুল খোলার কথা শুনেও তারা স্কুলে গিয়ে কিছু করতে পারছেন না। এতে বন্যা কবলিত এলাকার স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনেকেই হতাশায় দিন পার করছেন।

পৌর শহরের শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাবা মাসুদ হোসেন বলেন, করোনার কারণে সব স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা বাড়িতে মোবাইলে নানা ধরনের গেমে আসক্তি হয়ে গেছে। এসব গেম খেলা থেকে তাদের যদি দ্রুত সরিয়ে আনা না যায়, তাহলে শিক্ষার্থীরা আরও ধংসের পথে চলে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Advertisement

উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ভাটবেড়া মাহমুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ জানান, সরকারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। তবে দীর্ঘ ১৮ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তো তারা অনেকে কাজে লিপ্ত হয়ে গেছে। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্কুলমুখী করার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ঘোষণা শুনে উপজেলার ২৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এরই মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়েছে। বন্যার কারণে ১০টি স্কুল পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি স্কুলের চারপাশে পানি রয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, উল্লাপাড়ার ২৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার। শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান খোলার পরে কতজন শিক্ষার্থী ঝরে গেছে তার সঠিক তথ্য জানা যাবে।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এআরএ/জেআইএম

Advertisement