বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের কিছমত জামুয়া গ্রামের সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখে প্রাচীর তুলে জনসাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে হাবিবুর রহমান, ওমর আলী ও আসমা বেগম নামের তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তারা স্থানীয় আইয়ুব আলীর সন্তান। রাস্তার একটি অংশের জমি নিজেদের দাবি করে ওই সংযোগ সড়কের মুখে পাকা প্রাচীর তুলে তারা চলাচলের পথ আটকে দেন।
Advertisement
প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর অভিযোগ করে এলাকাবাসী। শনিবার (৪ সেপ্টম্বর) বিকেলে মোরেলগঞ্জ ইউএনও জাহাঙ্গীর আলাম, বলইবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজাহান খান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই প্রাচীর অপসারণ করে রাস্তাটি জনগণের চলাচলের জন্য উন্মক্ত করে দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইট সোলিংয়ের এ রাস্তাটি ২০ বছর আগে সরকারি বরাদ্দে নির্মাণ করা হয়। এর আগে স্থানীয় লোকজন তাদের নিজ জমি রাস্তার জন্য স্বেচ্ছায় দান করেন। মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদর, বাগেরহাট জেলা শহর, পার্শ্ববর্তী রাজৈর, আমবাড়িয়া, কালিকাবাড়ি এবং সীমান্তবর্তী ইন্দুরকানি উপজেলার পর্ত্তাশী, চন্ডিপুর, বাগলেরহাটসহ বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে সহজ যোগাযোগের মাধ্যম রাস্তাটি। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার পাঁচ শতাধিক মানুষ চলাচল করে এ রাস্তা দিয়ে।
চলতি বছরের ৩০ মার্চ সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখের জমির কিছু অংশ হাবিবুর রহমান ও আসমা বেগম গংদের দাবি করে সেখানে টিনের বেড়া দিয়ে পথ আটকে দেন। পরে স্থানীয় বলইবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজেই ওই রাস্তার প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করেন। ৩১ আগস্ট রাতের আঁধারে পাকা রাস্তার প্রবেশমুখে ফের ইট দিয়ে প্রাচীর তৈরি করে জনগণের চলাচল বন্ধ করে দেন হাবিবুর রহমান, ভাই ওমর আলী ও তার বোন আসমা বেগম। অভিযোগ পেয়ে শনিবার তা অপসারণ করেন মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম। সরকারি ইট তুলে ফেলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
Advertisement
ইউএনও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই সংযোগ সড়কটি জনগণ ব্যবহার করছে। হঠাৎ করে কেউ সেটি বন্ধ করতে পারেন না। রাস্তাটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
বলইবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান খান বলেন, সংযোগ সড়কের মুখের অংশে হাবিবুর রহমান ও তার বোন আসমা বেগম নিজেদের পৈতৃক জমি দাবি করে পথ আটকে দিয়েছিলেন।
এদিকে রাস্তায় প্রাচীর তুলে জনসাধারণের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করায় রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) মোরেলগঞ্জ থানায় মামলা করেন তার বড় ভাই মুনসুর আলী। পারিবারিক বিরোধ নিয়ে গত ৩১ আগস্ট মুনসুর আলীর স্ত্রী সেলিমা বেগমকে মারপিট করে আহত করেন হাবিবুর রহমান।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, মামলার একমাত্র আসামি হাবিবুর রহমান পলাতক। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।
Advertisement
অভিযুক্ত আসমা বেগম বলেন, যে জমির ওপর দিয়ে রাস্তা গেছে সেটি তার পৈতৃক সম্পত্তি। রাস্তার জায়গা অন্য দাগে বলে তিনি জানান।
স্থানীয় আব্দুল খালেক বলেন, রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির প্রতিবাদ করায় হাবিবুর রহমান নিজে তার বড় ভাই মুনসুর আলীর স্ত্রী সেলিমা বেগমকে গত ৩১ আগস্ট পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেন। এ ঘটনায় হাবিবুর রহমান, ওমর আলী ও আসমার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
শওকত আলী বাবু/এসআর/জেআইএম