ফরিদপুরে প্রতিদিনই বাড়ছে পদ্মার পানি। বর্তমানে পানি বেড়ে প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমির ক্ষেত।
Advertisement
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহামুদ জানান, পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি তিন সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পানি বাড়ায় ফরিদপুর সদর, চরভদ্রাসন, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এসব এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক গ্রামের ফসলি জমি, রাস্তা, নিচু এলাকার বসতবাড়ি তলিয়ে গেছে। বন্যার পানির তীব্র স্রোতে সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ও অম্বিকাপুর ইউনিয়নের কয়েকটি সড়কের বেশির ভাগ অংশ ধ্বসে গেছে। নর্থ চ্যানেল ও ডিক্রিরচর ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার মানুষ। বসত ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় অনেকেই বাঁশ-কাঠ দিয়ে উঁচু মাচা তৈরি করে সেখানে দিনযাপন করছেন। গবাদি পশু নিয়েও চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বানভাসীদের মধ্যে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর খাবারের সংকটও। পানি বাড়ায় মধুমতি ও আড়িয়াল খাঁ নদীর বিভিন্ন অংশে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশকিছু ঘরবাড়ি, একটি মসজিদ, এক কিলোমিটার পাকা রাস্তা বিলীন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চরাঞ্চল থেকে শহরে আসার দশটি সড়ক তলিয়ে গেছে পানিতে।
Advertisement
নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান জানান, বন্যার পানি বাড়তে থাকায় ইউনিয়নের প্রায় সব রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেঙে গেছে পাঁচটি রাস্তা। এসব এলাকার মানুষ অসহায় অবস্থায় দিন পার করছেন।
জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, পানিবন্দি মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। দুর্গতদের মধ্যে বিতরণের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত রয়েছে। এছাড়া চরাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলোকে পানি বিশুদ্ধ করার জন্য ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সরকারিভাবে ৫০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্গতদের মাঝে নগদ অর্থ ও শিশু খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
এন কে বি নয়ন/ এফআরএম/এএসএম
Advertisement