আফগানিস্তানে নিজেদের অধিকার রক্ষার দাবিতে রাজপথে বিক্ষোভে নেমেছেন অর্ধশত নারী। এসব নারীরা নিজেদের কাজ করার অধিকার, ভবিষ্যৎ সরকারে নারীদের ভূমিকা এবং তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণের দাবিতে কাবুলের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছন। তবে নারীদের এই বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে তালেবানের বিরুদ্ধে।
Advertisement
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা একটি সেতু থেকে হেঁটে প্রেসিডেন্ট ভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস এবং পিপার স্প্রে ছোঁড়া হয়। কাবুল এবং হেরাতে নারীদের বেশ কয়েকটি বিক্ষোভের মধ্যে এটি সর্বশেষ বিক্ষোভ।
নারীরা বাইরে কাজ করার অধিকার এবং সরকারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়েছে এই বিক্ষোভে। তালেবান বলেছে যে, আগামী দিনে তারা তাদের প্রশাসনের গঠন কাঠামো ঘোষণা করবে। তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নারীরা সরকারে যোগ দিতে পারবে, কিন্তু মন্ত্রীর পদে থাকতে পারবেন না।
অনেক নারী ভয় পাচ্ছেন যে, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে তালেবান ক্ষমতায় থাকার সময়ে নারীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছিল, সেই একই আচরণ আবারও করা হবে কীনা। নারীদের বাইরে বের হতে হলে মুখ ঢেকে রাখতে হতো এবং ছোটখাটো অপরাধের জন্যও কঠোর শাস্তি দেওয়া হতো।
Advertisement
এক নারী সাংবাদিক বলেন, পঁচিশ বছর আগে যখন তালেবান এসেছিল, তারা আমাকে স্কুলে যেতে বাধা দিয়েছিল। তাদের শাসনের পাঁচ বছর পর, আমি পড়াশুনা করেছি এবং কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমাদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য হলেও, আমরা এটি হতে দেব না।
এদিকে, কাবুলের উত্তরের পঞ্জশির উপত্যকায়ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে স্থানীয় যোদ্ধারা তালেবান দখল রুখতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে দাবি এবং পাল্টা দাবি রয়েছে। তালেবান বলছে যে, তারা আরও দুটি জেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং প্রদেশটির কেন্দ্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আফগানিস্তানের ন্যাশনাল রেজিস্টেন্স ফ্রন্ট (এনআরএফ) এর এক মুখপাত্র বলেন, প্রচণ্ড লড়াই চলছে এবং হাজার হাজার তালেবানকে ঘিরে রাখা হয়েছে।
১৯৮০-এর দশকে আফগানিস্তান সোভিয়েত দখলে থাকার সময় এবং তালেবানদের আগের শাসনামলে পঞ্জশির উপত্যকায় দেড় থেকে দুই লাখ মানুষের বসবাস ছিল।
Advertisement
এনআরএফের নেতা আহমদ মাসউদ হেরাতে নারীদের বিক্ষোভের প্রশংসা করেছেন এবং বলেন পঞ্জশিরে প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে। তবে এনআরএফ বা তালেবানদের কোনো দাবিই স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছাড়ার পর কাবুল বিমানবন্দরের কার্যক্রম আবারও শুরু হচ্ছে। আফগান বিমান সংস্থা আরিয়ানা তিনটি শহর: হেরাত, মাজার-ই-শরীফ এবং কান্দাহারের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট আবারও চালুর ঘোষণা দিয়েছে।
আল-জাজিরা টিভি কাতারের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে, কাতারের একটি কারিগরি দল বিমানবন্দর আবারও সচল করতে কাজ করছে। এর ফলে ত্রাণবাহী ফ্লাইট চলাচল সম্ভব হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন রোববার কাতার সফর করবেন। দেশটি আফগানিস্তান বিষয়ে অন্যতম মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। তবে ব্লিনকেনের এই সফরে তালেবানের কোনো নেতার সঙ্গে সাক্ষাতের আশা নেই।
টিটিএন/এএসএম