পাকিস্তানের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টিলিজেন্সের (আইএসআই) প্রধান ফাইজ হামিদ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পৌঁছেছেন। তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো কোনো উচ্চ পদস্থ বিদেশি কর্মকর্তা দেশটিতে পা রাখলেন।
Advertisement
পাকিস্তানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে সঙ্গে নিয়েই কাবুলে সফর করছেন ফাইজ হামিদ। তবে শনিবার ফাইজ হামিদ কাবুলে পৌঁছানোর পর এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। পাকিস্তান এবং আইএসআই-এর বিরুদ্ধে আগে থেকেই তালেবানকে সহায়তা দেওয়া অভিযোগ রয়েছে। ফাইজ হামিদের এই সফর তালেবানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক নিয়ে সমালোচনা আরও উস্কে দেবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার খুশিতে শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ‘আকাশের দিকে’ গুলি ছুড়ে আনন্দ উদযাপন করেছেন তালেবান যোদ্ধারা। তবে তাদের এই কাণ্ড বিপদ ডেকে এনেছে অনেকের। এদিন কাবুলে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৭ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪১ জন। শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আফগান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, তালেবানবিরোধীদের শেষ ঘাঁটি পঞ্জশির প্রদেশও নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার খবরে শুক্রবার রাতে কাবুলের বিভিন্ন স্থানে ‘আকাশের দিকে’ গুলি ছুড়ে বিজয়োল্লাস করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। এর পরপরই শহরের ইমারজেন্সি হাসপাতালগুলোতে দলে দলে গুলিবিদ্ধ মানুষ আসতে শুরু করেন। হাসপাতালগুলো জানিয়েছে, তাদের কাছে এ পর্যন্ত আহত ৪১ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া মরদেহ এসেছে ১৭টি।
Advertisement
কাবুল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে চরম মানবিক সংকটে পড়েছে দেশটি। মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে জাতিসংঘ। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস আফগানদের ত্রাণ সহায়তার জন্য বিশ্ব প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করতে জেনেভা সম্মেলনে যাচ্ছেন। তবে আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠনের মুখে আফগানদের জন্য ত্রাণ সহায়তা দিতে রাজি থাকলেও তালেবানকে অর্থ দিতে নারাজ যুক্তরাষ্ট্র।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে চাইছে মার্কিন কংগ্রেস। তবে দেশটির নতুন তালেবান সরকারকে সরাসরি অর্থায়নের কোনও সুযোগ রাখা হচ্ছে না। যদিও বিশ্ব নেতারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন বৈঠকে বসার বিধ্বস্ত আফগানিস্তানকে সহায়তা করার জন্য।
২০০১ সালে আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়ে তালেবান সরকারকে উৎখাত করার পর প্রচুর অর্থায়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সরকার পরিচালনা ও উন্নয়ন এবং মানবিক সহায়তার জন্য ১৩ হাজার কোটি ডলার দেওয়া হয়।
মার্কিন কংগ্রেসের সহযোগীরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত শরণার্থীদের জন্য আইনপ্রণেতারা সহায়তা দিতে রাজি হলেও নতুন আফগান সরকারকে এখন কোনো সহায়তা দেবে না তারা।
Advertisement
টিটিএন/এমএস