দেশজুড়ে

ইজতেমা মাঠে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে

কক্সবাজারে দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হচ্ছে মিনি বিশ্ব ইজতেমা। আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে আরম্ভ হওয়া তিন দিনব্যাপী ইজতেমা আয়োজনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। এবারে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে কক্সবাজার শহরের জেলে পার্ক সংলগ্ন বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের পাশে। ইজতেমার কর্মসূচি অনুযায়ী ১৬ ডিসেম্বর মাগরিবের নামাজের পর থেকে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আয়োজকদের আশা, এবারের ইজতেমায় তিন লক্ষাধিক মানুষ উপস্থিত হবেন। তবে দুই লাখ মানুষের বসার আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। এবারের ইজতেমায় মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বয়ান দিবেন রাজধানী কাকরাইলের তাবলিগ জামাতের মুফতিরা। কক্সবাজার মিনি ইজতেমার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক মুফতি মুরশিদুল আলম জানান, তিন দিনের ইজতেমায় কক্সবাজার জেলার আট উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে তাবলিগে থাকা বিভিন্ন দেশের মানুষ উপস্থিত থাকবেন। ইজতেমার মূল উদ্দেশ্য হলো ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে তাবলিগে যাওয়ার জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। এবারের ইজতেমার পর প্রায় ৩০ হাজার মানুষ তাবলিগে ৪০ দিনের সফরের উদ্দেশ্যে আল্লাহর রাস্তায় বের হবেন বলেও আশা করেছেন তিনি। তিনি আরো জানান, ইজতেমা ময়দানে অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়েছে ২০০ টয়লেট, ৪০০ প্রসাবের স্থান, ১২টি পানির পাম্প, ৩০টি নলকূপ। আর অনুমতিক্রমে একটি পুকুর ব্যবহার করা হবে। মুফতি মুরশিদ জানান, কক্সবাজার জেলা ইজতেমায় লাখো মুসল্লির খেদমত করার জন্য ৫০০ জনকে ৯টি জামাতে ভাগ করা হয়েছে। প্রত্যেক জামাতে প্রায় ৫০ জন করে কাজ করবেন। ইজতেমার কর্মসূচি অনুযায়ী ১৬ ডিসেম্বর মাগরিবের নামাজের পর থেকে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। প্রত্যেক নামাজের পর বয়ান হবে এবং ইজতেমার তৃতীয় দিন মোনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমার পরিসমাপ্তি ঘটবে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জেলা ও ঢাকা থেকে আগত অসংখ্য মুসল্লি ইজতেমার উপযোগী মাঠ তৈরির কাজ করছেন। ইতিমধ্যে টয়লেট, প্যান্ডেল ও পানি নিষ্কাশনের কাজ ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মরত মুসল্লিরা। তবে তাদের দাবী এবারে তীব্র পানি সমস্যা দেখা দিবে।এদিকে শান্তিপূর্ণভাবে মিনি ইজতেমা সম্পন্ন করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। ইজতেমাকে ঘিরে পর্যটন শহরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আসলাম হোসেন জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মুসল্লিরা ইজতেমায় যাতে ইবাদত বন্দেগী করতে পারে সে জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ইজতেমায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে ১শ` জন অফিসার ও ২শ` কনস্টেবল ইতোমধ্যে কক্সবাজারে পৌঁছেছেন। ঢাকা থেকে আগত পুলিশ ছাড়াও সদর থানা ও পুলিশ লাইনের পুলিশ নিরাপত্তা রক্ষার কাজে মাঠে থাকবেন। পোশাকধারী ছাড়াও সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করবেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন। দক্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে মাঠে কাজ শুরু করেছে। টানা তিন দিন বেশ কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশ অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। যে কোনো নাশকতা ও বি-শৃঙ্খলামূলক ঘটনা কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলেও জানান তিনি। বিকেলে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান মাবু ইজতেমা স্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি জানান, ঢাকার টঙ্গীর পর কক্সবাজারে এতোবড় ইজতেমার আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত। ইজতেমা সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের সহযোগীতা দিচ্ছে কক্সবাজার পৌর কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে পৌরসভার পক্ষ থেকে ইজতেমার ময়দানস্থলে বিশাল ভিআইপি প্যান্ডেল স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া টানা তিনদিন ময়দানে মশার স্প্রে, গ্লিসারিং পাউডার ও নিরাপদ পানি সরবরাহ করা হবে। ওই তিন দিন ময়দানে পৌরসভার ১৫ জন কর্মচারী মুসল্লিদের খেদমতে নিয়োজিত থাকবে। এছাড়াও ইজতেমা সফল করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় রক্ষা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, গত বছর সর্বপ্রথম কক্সবাজারে মিনি ইজতেমা আয়োজন করা হয়। এ সময় লাখো মানুষের সমাগম ঘটে দুই দিনব্যাপী ওই ইজতেমায়। এআরএ/পিআর

Advertisement