ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছু তৈরির নেশা ছিলো ফরিদগঞ্জের বদরপুর গ্রামের প্রতিভাবান কিশোর মুরাদের। তার নিজ হাতে তৈরি বিমান আকাশে উড়তে না পারলেও মহান বিজয় দিবসের শুভক্ষণে পানিতে ভেসেছে। উপজেলা পরিষদের দীঘিতে বুধবার সকাল থেকেই এটি পানিতে ভাসে। মুরাদের বিমান ফরিদগঞ্জে নেয়ার সংবাদে বুধবার সকাল থেকেই শতশত নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর উপজেলা পরিষদের সামনে ভিড় করে। ছোট ছোট শিশুরা বিমানের ভেতরে প্রবেশ করে পুরো দীঘি ভ্রমণ করে। এ ব্যাপারে মুরাদ জানায়, তার স্বপ্ন আরো ভাল ও সুন্দর কিছু তৈরি করা। তার এই উদ্যোগকে বাস্তবে রূপ দিতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছে সে। এদিকে কিশোর মুরাদের বিমান তৈরি ও তার প্রতিভার কথা জানতে পেরে ফরিদগঞ্জ এ আর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজল জানান, মুরাদের অদম্য প্রতিভার উন্মেষ ঘটাতে তাকে বিজ্ঞান ক্লাবের সদস্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করছি, সে এই ক্লাবের সাথে যুক্ত হয়ে নিজের উদ্ভাবনী শক্তিকে আরো বিকশিত করবে। উল্লেখ্য, বদরপুর গ্রামের এক হতদরিদ্র রিকশাচালক নজরুল ইসলামের ছেলে কিশোর মুরাদ হোসেন (১৫) গত আড়াই মাস ধরে এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে বিমানটি তৈরি করে।স্থানীয় লোককন জানায়, দরিদ্র মুরাদের এমন উৎসাহ দেখে এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় মুরাদকে আর্থিক সহযোগিতা করে। ইতোপূর্বে সে হেলিকপ্টার ও লঞ্চ বানিয়ে তা পানিতে ভাসিয়ে এলাকার লোকদেরকে আনন্দ দিয়েছে। বিনিময়ে কিছু না চাইলেও তার নির্মাণ শৈলী দেখে আনন্দে উদ্বেলিত মানুষের উৎসাহ দেখে মুরাদও আরো উৎসাহ পায়। এতে করে নুতন নুতন জিনিস তৈরি করতে তার আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। জানা গেছে, তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় মুরাদ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। অভাব আর অনটনের কারণে মুরাদের পড়ালেখা বেশিদূর এগুতে পারেনি। তার বাবা নজরুল ইসলাম একজন রিকশাচালক, মা জাহানারা বেগম বাক প্রতিবন্ধী। লেখপড়া করতে না পেরে মুরাদ বর্তমানে ইলেকট্রিকের কাজ করে। সেখান থেকেই নতুন কিছু উদ্ভাবনের চিন্তা মাথায় আসে তার। এলাকাবাসীর কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে মুরাদ হোসেন গত আড়াই মাসে ওই বিমানটি তৈরি করে। যা তৈরিতে তার ব্যয় হয়েছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। বিমানটি তৈরিতে ককসিট, স্টিলের রড, ব্যাটারি, কাঠসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করতে হয়েছে। এর ভেতরে থাকা ইঞ্জিন চালু করলে অবিকল বিমানের শব্দ শোনা যায়। বসার জন্য বিমানটির পাইলট ছাড়াও ৭টি আসন রাখা হয়েছে।এসএইচএস/পিআর
Advertisement