দেশজুড়ে

আখাউড়ায় বইছে নির্বাচনের আমেজ

আগামী ৩০ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন পৌরসভার হলেও উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো আখাউড়া জুড়ে। গত ১৪ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর থেকেই প্রার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে পৌর এলাকাগুলো। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পৌর এলাকার রাজপথ, পাড়া-মহল্লার অলি-গলি সবখানেই শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের পোস্টার। ভোটারদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রার্থীরা চাইছেন ভোট আর দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি।নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত আখাউড়া পৌর এলাকার প্রতিটি চায়ের দোকানে চলে ভোটারদের আড্ডা। সেই আড্ডায় উঠে আসছে প্রার্থীদের নানা দোষ-গুণের কথা। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে প্রার্থীদের নিয়ে চলে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কে হচ্ছেন মেয়র, আওয়ামী লীগ নাকি বিএনপি মনোনীত প্রার্থী-এ নিয়ে ভোটারদের একে অপরের সঙ্গে চলে তর্ক-বিতর্ক।এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল এবং বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মো. মন্তাজ মিয়া।নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শেখ বোরহান উদ্দিন ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীন আব্দু মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও গত ১৩ ডিসেম্বর দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে দুজনেই তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি উপজেলা বিএনপি থেকে সদ্য পদত্যাগ করা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান বাবুল। মশিউর রহমান বাবুল ছাড়া আরও দুইজন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে স্থানীয়রা বলছেন, মূলত মেয়র পদে লড়াইটা হবে ‘নৌকা’ ও ‘ধনের শীষ’ প্রতীকের।নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এখন দিন-রাত জনসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে গিয়ে চাইছেন ভোট আর পৌর নাগিরকদের উন্নয়নে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাকজিল খলিফা কাজল জাগো নিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ আমাকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছে। এজন্য আমি দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিরঋণী। আমার বিশ্বাস গত নির্বাচনের মতো এবারও ভোটাররা আমাকে বিপুল ভোটে মেয়র পদে নির্বাচিত করবেন। আমি নির্বাচিত হলে পৌরবাসীর সহযোগিতা নিয়ে এমন একটি পৌরসভা গঠন করবো যাতে করে দেশের বাকি পৌরসভাগুলো আখাউড়া পৌরসভাকে অনুকরণ করে।তবে ভোটারদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র পদে বিজয়ী হওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাজী মো. মন্তাজ মিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমি নির্বাচিত হলে পৌরবাসীর মঙ্গল ও উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করবো। তবে ভোটাররা বলছেন যিনি সৎ ও যোগ্য এবং পৌরবাসীর সুখে-দুঃখে সবসময় পাশে থাকবেন তাকেই ৩০ তারিখে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।আখাউড়া পৌর এলাকার কয়েকজন ভোটার জাগো নিউজকে বলেন, প্রার্থীরা এলাকার উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে যিনি সৎ, যোগ্য ও সবসময় পৌরসভার নাগরিকদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকবেন এবং উন্নয়নে কাজ করবেন তাকেই তারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত করবেন তাদের পৌর পিতাকে।উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আখাউড়া পৌরসভা। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ১১টি ভোট কেন্দ্রে এ পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ পৌরসভার মোট ভোটর সংখ্যা ২৪ হাজার ৯৫০ জন। এর মধ্যে পুুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৪৫৮ জন ও নারী ভোটার ১২ হাজার ৪৯২ জন। নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।আজিজুল আলম সঞ্চয়/এসএস/এমএস

Advertisement