দেশজুড়ে

জলাবদ্ধতায় দিশেহারা গোপালগঞ্জের কৃষক

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের গোবরা ও ভেটেদৌড় মৌজার ২শ` বিঘা কৃষি জমি জলাবদ্ধতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। ওই এলাকার কৃষকরা তাদের জমিতে চাষাবাদ করতে পারছেন না। স্থায়ী জলাবদ্ধতার ফলে ওই মৌজার ঘোনাপাড়া, চরবয়রা ও ভাটিয়াপাড়া গ্রামের কৃষকরা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় কৃষি উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। সারা বছর ধরে ওইসব জমিতে পানি জমে থাকে। জমি থেকে পানি বের হয়ার পথ না থাকায় কৃসকদের পক্ষে জমি চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। দিশেহারা হয়ে পড়েছে তারা।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এসব জমির পূর্ব পাশে ১শ` শয্যার শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল এবং ডেন্টাল কলেজের স্থাপনা  গড়ে ওঠায় পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ ঘোনাপাড়া কাটা খালটি নির্মাণ সামগ্রীর বর্জ্য পড়ে অনেকাংশে ভরাট হয়ে যায়। এ কারণে ওই জমি থেকে কোনো পথ বা ড্রেন না থাকায় পানি নামতে পারছে না। স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে।ভুক্তভোগী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব জমিতে একসময় বিভিন্ন জাতের রবিশস্য ও ইরি-বোরো ধানের চাষ হতো। গত ৩-৪ বছর ধরে এখন ওখানে কিছুই হচ্ছে না। কৃষকরা থাকছেন হাত গুটিয়ে। অর্থনৈতিকভাবে তারা চরম ক্ষতির শিকার হয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তাদের দেখার কেউ নেই।জলাবদ্ধতা নিরসনে সম্প্রতি গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। চক্ষু হাসপাতাল ও ডেন্টাল কলেজের পাশ দিয়ে একটি পাকা ড্রেন তৈরির দাবি জানিয়েছেন।এ ব্যাপারে ভাটিয়াপাড়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক বদরুজ্জামান মুন্সির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে আমরা আমাদের জমিতে চাষ করতে পারছি না। আমার জমিতে দুই-তিনটি ফসল হতো, এখন একটা  ফসলও পাইনা। পরিবার পরিজন নিয়ে ভারি কষ্টে আছি।ওই গ্রামের ইকবাল ফকির বলেন, সারা বছরই আমার জমিতে পানি জমে থাকে। ওখানের একখণ্ড জমির ফসলই ছিল আমার আয়ের প্রধান উৎস। এখন জমি চাষ করতে পারি না। ফসল ফলাতে পারি না। পানি সরার খালটি ভরাট হয়ে আছে। আমরা এখন দুঃসময়ের মধ্যে আছি। এর প্রতিকার না হলে আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে যাবো।ভাটিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুন্সি কামরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময় জলাবদ্ধতা দূরীকরণের দাবি জানিয়েছি। জেলা প্রশাসকের কাছে ড্রেন তৈরি করার আবেদন পেশ করেছি। এটা না হলে আমরা এলাকার শতাধিক কৃষক পরিবার মহাবিপদে পড়ে যাবে। দ্রুত ড্রেন নির্মাণ করে জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা  করা হোক এটাই আমরা চাই।গোবরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ফয়সাল কবিরের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, স্থায়ী জলবদ্ধতায় কৃষকরা জমি চাষ করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমারও ওখানে ৮-১০ বিঘা জমি আছে। ওই জমিও অনাবাদি পড়ে রয়েছে। আমি বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেছি ঘোনাপাড়া কাটা খালের সঙ্গে সংযুক্ত করে একটি ড্রেন নির্মাণ করার। কিন্তু অনেকেই জমি দিতে রাজি না হয়ায় ড্রেনটি করা সম্ভব হয়নি। এলাকার কৃষকদের রক্ষায় সমস্যাটি আশু সমাধান হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।এস এম হুমায়ূন কবীর/এমজেড/বিএ

Advertisement