আন্তর্জাতিক

কাবুল ত্যাগ করা শেষ মার্কিন সেনা তিনি

নিজেদের তল্পিতল্পা গুটিয়ে আফগানিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার রাতে রাজধানী কাবুলে অবস্থিত হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ ফ্লাইটটি ছেড়ে গেছে। এরপরেই মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর এক টুইট বার্তায় মেজর জেনারেল ক্রিস ডোনাহুর একটি ছবি পোস্ট করেছে। এই মার্কিন সেনা সবার শেষে বিমানে ওঠেন। তিনি এয়ারবোর্ন বিভাগের ৮২তম কমান্ডার। কাবুল থেকে ওই সেনাসহ অন্যদের বহনকারী সি-১৭ বিমানটি সোমবার রাতে কাবুল ছেড়ে যায়।

Advertisement

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের টুইট বার্তায় বলা হয়, আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়া শেষ সেনা ছিলেন ক্রিস ডোনাহুর। সোমবার ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাককেনজি জানান, ডোনাহু এবং কাবুলে মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিক চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স রোজ উলসন আফগানিস্তানের মাটি ত্যাগ করা শেষ দুই মার্কিন কর্মকর্তা। তারা একটি সামরিক বিমানে করে কাবুল ছাড়েন।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের শেষ ফ্লাইট কাবুল ছাড়ার পর আফগানিস্তানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান এখন স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র। ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে মার্কিন সেনাদের আফগানিস্তান ছাড়ার ঘটনাকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) রাজধানী কাবুলে অবস্থিত হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেন তালেবান যোদ্ধারা। পরই জয় উদযাপন করতে দেখা গেছে তাদের। আকাশে গুলি ছুড়ে আফগান সদস্যরা আনন্দ প্রকাশ করেছেন। এর আগে তালেবান দেশের নিয়ন্ত্রণ নিলেও যুক্তরাষ্ট্র কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু অবশেষে বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণও এখন তালেবানের হাতে।

Advertisement

আফগানিস্তান ছাড়ার আগে নিজেদের সামরিক প্লেন, সাঁজোয়া যানবাহনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নষ্ট করে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় সোমবার রাতে কাবুল বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ ফ্লাইট ছাড়ার আগে সবকিছু নিস্ক্রিয় করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সৈন্যরা।

মার্কিন মিশনের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাককেনজি জানিয়েছেন, ৭৩টি সামরিক বিমান, ৭০টি সাঁজোয়া যান এবং আরও ২৭টি সামরিক সরঞ্জাম নষ্ট করে ফেলা হয়েছে যেন পরবর্তীতে এগুলো তালেবানরা ব্যবহার করতে না পারে।

তিনি বলেন, এই সামরিক বিমানগুলো আর কখনওই আকাশে উড়বে না। এগুলো আর কেউ চালাতে পারবে না। লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসের পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তালেবান সদস্যরা বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ করে মার্কিন সামরিক বিমান এবং অন্যান্য জিনিসপত্র দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্র তাদের উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন রকেট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও নিস্ক্রিয় করে গেছে এবং এর কিছুই তারা সাথে করে নিয়ে যায়নি।

মঙ্গলবার কাবুল বিমানবন্দর থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আমাদের এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান এখন স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র।

Advertisement

টিটিএন/এমএস