আইন-আদালত

জুলহাস-তনয় হত্যা: প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি চায় পরিবার

পাঁচ বছর আগে রাজধানীর কলাবাগানে লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে ঢুকে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার প্রটোকল কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু লোকনাট্যদলের শিশু সংগঠন পিপলস থিয়েটারের কর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় করা মামলার রায় আগামীকাল মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ঘোষণা করবেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান। রায়ে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল জিয়াসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ। অপরদিকে নিহতদের পরিবারও প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি চায়।

Advertisement

মামলার বাদী জুলহাসের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তি পাক, এটাই আমাদের পরিবারের প্রত্যাশা।’

ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বলেন, ‘জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয় হত্যা মামলায় আসামি মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা মামলার অপর চার আসামির হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথাও জবানবন্দিতে বলেছেন। এছাড়া সাক্ষ্য-প্রমাণে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে, আসামি মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল জিয়াসহ আটজন জুলহাস ও তনয় হত্যায় জড়িত। আমরা মঙ্গলবারের রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছি।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘মামলায় হত্যার দায় স্বীকার করে চার আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে কোনো আসামিকে সাজা দেওয়া যায় না। আমরা আসামিদের খালাস প্রত্যাশা করছি।’

Advertisement

এর আগে গত সোমবার (২৩ আগস্ট) রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রায় ঘোষণার জন্য ৩১ আগস্ট দিন ধার্য করেন। মামলায় বিভিন্ন সময়ে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে ঢুকে জুলহাস মান্নান ও মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

ওই ঘটনায় রাজধানীর কলাবাগান থানায় জুলহাসের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন বাদী হয়ে হত্যা মামলা এবং সংশ্লিষ্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শামীম অস্ত্র আইনে পৃথক মামলা করেন।

এরপর ২০১৯ সালের ১২ মে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় দায়ের করা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল ইসলাম।

Advertisement

আলোচিত এ মামলার আসামিরা হলেন- চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল জিয়া, আকরাম হোসেন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী, মওলানা জুনায়েদ আহম্মেদ, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ। এদের মধ্যে মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ কারাগারে আছেন। বাকি চার আসামি শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন।

জেএ/এমকেআর/এসএইচএস/জিকেএস