দেশজুড়ে

হত্যাচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে স্ত্রীর বিরুদ্ধে চুরির মামলা

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে স্বামীর চুরি মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে শিশুসন্তানসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আয়েশা আঁখি আক্তার (২৩) নামের এক গৃহবধূ। তাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ ওই নারীর।

Advertisement

ভুক্তভোগী আঁখি আক্তার উপজেলার আরামনগর গ্রামের আশরাফ আলী হায়দারের মেয়ে। অভিযুক্ত স্বামীর নাম এনামুল হাসান তারেক। তিনি চর সরিষাবাড়ীর তুরাব আলীর ছেলে।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ আয়েশা আক্তার আঁখির সঙ্গে তারেকের বিয়ে হয়। পরে ব্যবসার কথা বলে এক লাখ ২৮ হাজার টাকা দামের একটি মোটরসাইকেল ও নগদ এক লাখ নেন তারেক। বিয়ের কয়েক মাস তাদের দাম্পত্য জীবন ভালোই চলছিল। পরে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন আঁখি আক্তার। তবে দিন যতই যায় আচরণ পাল্টে যেতে থাকে এনামুল হাসান তারেকের। তিনি আঁখিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন।

বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার সালিশও হয়েছে। সর্বশেষ শালিস বৈঠকে মীমাংসা হওয়ার পরও এক বছর আঁখি আক্তারকে তার পরিবারের কাছে যেতে দেয়নি তারেক হাসান ও তার পরিবার। এমনকি তার (আঁখি আক্তার) বাবা-মার সঙ্গে মোবাইলেও যোগাযোগ করতে না দিয়ে উল্টো স্যাভলন খাইয়ে হত্যার চেষ্টাও করেন তারা। পরে বাধ্য হয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে যান আঁখি আক্তার।

Advertisement

স্ত্রী পালিয়ে আসায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন স্বামী তারেকসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরবর্তীতে স্ত্রীর নামে চুরির অপবাদ এনে সরিষাবাড়ী থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে স্বামী তারেক হাসান।

ভুক্তভোগী আঁখি আক্তার বলেন, আমার স্বামী মাদকাসক্ত। মাদকের টাকার জন্য প্রায়ই আমাকে মারধর করেন। তার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দুধের শিশুকে নিয়ে আমি বাবার বাড়ি চলে আসি। এরপর থেকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী ইউসুফ আলী জাগো নিউজকে বলেন, আইনে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন না। কেননা স্বামী-স্ত্রীকে একই ব্যক্তি হিসেবে ধরে নেয়া হয়। তবে ইদানীং আমরা দেখছি, এ ধরনের কিছু কিছু মামলা হয়, যেগুলো হওয়া উচিত না। এগুলো সরাসরি আমলে নেওয়া উচিত না।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিকুল হক জাগো নিউজকে বলেন, মামলার বিষয়ে যদি কোনো অসঙ্গতি থাকে তাহলে এটা ফের বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে এর বেশি কিছু মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

Advertisement

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রাণী সরকার বলেন, এ রকম হয়রানি করার সুযোগ নেই। এটা আসলে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। এ রকম আসলে হওয়ার কথা না।

এসআর/জিকেএস