মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আরেকটি হামলার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। সামরিক কমান্ডাররা তাকে জানিয়েছেন, রোববারই (২৯ আগস্ট) এই হামলা হতে পারে। সুনির্দিষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য হুমকি থাকায় মার্কিন নাগরিকদের ওই এলাকা এড়িয়ে চলার জন্য সতর্ক করে দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। খবর বিবিসির।
Advertisement
নিরাপত্তা হুমকির কারণে ওই এলাকায় ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া যেসব মার্কিন নাগরিক বিমানবন্দরের প্রবেশদ্বারের কাছাকাছি অবস্থান করছেন তাদের অবিলম্বে ওই এলাকা ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
কাবুলে এখনো উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুক্তরাজ্যের সৈন্য, কূটনৈতিক এবং কর্মকর্তাদের নিয়ে শেষ ফ্লাইটটি কাবুল ছেড়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় কাবুল বিমানবন্দরের আবে ফটকে জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) খোরাসান প্রদেশ শাখা আইএস-কের ভয়াবহ বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক মানুষ।
ইসলামিক স্টেট গ্রুপের স্থানীয় একটি শাখা-ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসান প্রদেশ (আইএস-কে) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে। ওই হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে শুক্রবার আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ড্রোন হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে শীর্ষস্থানীয় দুই জন আইএস-কে নেতাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
Advertisement
এই দুইজন ব্যক্তি পরিকল্পনাকারী ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী বলে বর্ণনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে কাবুল বিমানবন্দরে হামলার সঙ্গে তারা সরাসরি জড়িত ছিলেন কীনা, তা এখনও পরিষ্কার নয়। শনিবার একটি বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, এই (ড্রোন) হামলাই শেষ নয়। জঘন্য ওই হামলার সঙ্গে যে ব্যক্তিই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের খোঁজ আমরা চালিয়ে যাব এবং উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।
আফগানিস্তানের সবচেয়ে চরমপন্থী ও সহিংস জঙ্গি গোষ্ঠী হচ্ছে আইএস-কে। আফগানিস্তানের বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণকারী তালেবানের সঙ্গে তাদের বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। তাদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনা করে যুদ্ধক্ষেত্র পরিত্যাগ করেছে তালেবান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ড্রোন হামলার নিন্দা জানিয়েছে তালেবান। তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিৎ ছিল আগে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা। কাবুল বিমানবন্দর থেকে দ্রুত গতিতে সৈন্যদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে সেখানে ৫ হাজার ৮শ সেনা থাকলেও এখন রয়েছে ৪ হাজার সেনা।
হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা বলছেন, চূড়ান্ত প্রত্যাহার শুরু হওয়ায় সামনের কয়েকদিন আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
Advertisement
এদিকে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, বিমানবন্দরের আশেপাশে আরও কয়েক স্তরের তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে তালেবান। বেশিরভাগ আফগানকে তারা এসব চেকপোস্ট পার হতে দিচ্ছে না। দুই সপ্তাহ আগে বিমানে করে উদ্ধার অভিযান শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত আফগান ও বিদেশি নাগরিক মিলিয়ে কাবুল থেকে এক লাখ ১০ হাজার মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
টিটিএন/এমএস