আন্তর্জাতিক

কাবুল বিমানবন্দরের ফটকে ‘বোমা বিস্ফোরণে’ নিহত ১১

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের একটি প্রবেশপথে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তালেবানের এক কর্মকর্তা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের আবে ফটকে এ বিস্ফোরণ ঘটে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে। পশ্চিমাসমর্থিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এই প্রথম এমন বিস্ফোরণ ঘটলো।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ জানিয়েছে, বিস্ফোরণ ঘটেছে বিমানবন্দর লাগোয়া ব্যারন ক্যাম্পের ভেতরের জটলা থেকে। যারা আফগানিস্তান ছাড়তে চাইছেন, তারাই ব্যারন ক্যাম্পে জড়ো হয়েছিলেন।

তোলো নিউজের সাংবাদিক আবদুল্লাহ হামিম ইমার্জেন্সি হসপিটাল থেকে জানিয়েছেন, ওই বিস্ফোরণে আহত বেশ কিছু লোককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Advertisement

এখন পর্যন্ত কেউ এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এর আগে কাবুলে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দূতাবাস স্বদেশের নাগরিকদের ‘জঙ্গি হামলার’ আশঙ্কায় বিমানবন্দর এড়িয়ে চলার সতর্কতা দেয়।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, অন্তত দুটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। এর মধ্যে একটি ঘটেছে ব্যারন ক্যাম্পের পাশে। পেন্টাগনের তরফ থেকে ‘কয়েকজন মার্কিন ও বেসামরিক নাগরিকের হতাহতের’ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে বেশ কিছু মরদেহ পড়ে থাকার ছবিও ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে গুলির শব্দও শোনা গেছে। এ বিষয়টি অবগত করা হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে।

আফগানিস্তানে আত্মঘাতী বা বোমা হামলার জন্য পশ্চিমারা আগে তালেবানকে দায়ী করতো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তালেবান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এখন এ ধরনের হামলার জন্য ইরাক-সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসকে দায়ী করা হয়ে থাকে।

Advertisement

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান তালেবানের শাসনে ছিল। এর মধ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদার নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট সেখানে যৌথ অভিযান চালায়, যার মাধ্যমে তালেবান শাসনের অবসান ঘটে।

অভিযানে আল-কায়েদার শীর্ষ নেতাদের দমন করা হলেও ‘শান্তিরক্ষার স্বার্থে’ সেখানে ঘাঁটি গেড়ে অবস্থান করছিল পশ্চিমা সেনারা। কিছু বছর পার হওয়ার পর সেখান থেকে ধাপে ধাপে যুক্তরাষ্ট্র বাদে অন্য দেশের সেনাদের ফিরিয়ে নেয়া হয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রও তাদের সেনাদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করলে প্রত্যন্ত এলাকা দখল করে থাকা তালেবান কাবুলের ক্ষমতার মসনদে উঠতে জোর লড়াইয়ে নামে। যদিও এর মধ্যে তালেবানের সঙ্গে কাবুলের শাসকগোষ্ঠীর সংঘাতের অবসানে কাতারসহ বিভিন্ন পক্ষের মধ্যস্থতায় নানা সময়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সব আলোচনাই ভেস্তে গেছে।

তালেবানের আগ্রাসনের মুখে গত ১৫ আগস্ট পশ্চিমাসমর্থিত সরকারের পতন ঘটে। তারপর থেকেই কাবুল চালাচ্ছে তালেবান।

যদিও তারা সবার জন্য ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করেছে, তবে তালেবান ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে আফগানিস্তান ত্যাগের হিড়িক পড়ে গেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ কাবুলে বিশেষ প্লেন পাঠিয়ে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়েছে। কাবুল বিমানবন্দরে এই কার্যক্রমই চলছে এখনো।

এইচএ/জিকেএস