দেশজুড়ে

বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার নদীর পানি

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে বিপাকে পড়েছেন নদীপাড়ের হাজার-হাজার মানুষ।

Advertisement

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের দায়িত্বে থাকা গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) আব্দুল লতিফ বলেন, যমুনা নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টেও বেড়েছে যমুনা নদীর পানি।

তিনি আরও বলেন, যমুনা, ইছামতি, করতোয়া, ফুলজোড় ও বড়াল নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানিতে জেলার কাজীপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ, তেকানি, মুনসুরনগর, খাসরাজবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে নদীতে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি ও বসতভিটা। জেলার সাতটি উপজেলার অন্তত ২০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

Advertisement

চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বেনুনাই গ্রামে শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। এসব এলাকার ১৩ গ্রামের অসংখ্য বসতবাড়ি ধীরে-ধীরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।

এ বিষয়ে নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বলেন, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ইউনিয়নে ব্যাপক আকারে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি ও বৈদ্যুতিক খুঁটি। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসী।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম ভুঁইয়া বলেন, যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে অনেক ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। পানি বন্দি হচ্ছে চরাঞ্চলের শত-শত পরিবার।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, দুদিন স্থিতিশীল থাকার পর যমুনায় আবারও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পাবে। তবে বড় বন্যার আশঙ্কা নেই।

Advertisement

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে যমুনায় পানি বাড়ছে। বৃহস্পতিবার সকালে যমুনার হার্ডপয়েন্ট এলাকায় পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৪১ মিটার।

সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ শুরু করেছে। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ মজুত রয়েছে। প্রয়োজন মোতাবেক পানিবন্দি মানুষদের মাঝে ত্রাণগুলো বিতরণ করা হবে।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/আরএইচ/জেআইএম