‘গরমে আর কুলাইতে পারি না, দশ হাত গেলেই পিপাসা লাগে।’ মঙ্গলবার মধ্য দুপুরে রাজধানীর পলাশী-নীলক্ষেতগামী রাস্তায় দাঁড়িয়ে এ কথা বলছিলেন ঠেলাগাড়িচালক মহিউদ্দিন মিয়া।
Advertisement
কিছুক্ষণ আগে রাস্তার পাশে ফুটপাতে ঠেলাগাড়িটি থামান। ভ্যাপসা গরমে আপাদমস্তক ঘেমে গেছেন তিনি। পরিধেয় গেঞ্জি ও লুঙ্গি ভিজে একাকার। তার পাশেই দাঁড়ানো বয়সে তরুণ তারই আরেক সহকর্মী রুবেল মিয়াও গরমে কাহিল। ধপ করে ফুটপাতে বসে পড়লেন তিনি। জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মহিউদ্দিন মিয়া জানান, নয়াবাজার থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা ভাড়ায় কাগজভর্তি ঠেলাগাড়ি নিয়ে নীলক্ষেতে যাচ্ছেন। গরমে ঠেলাগাড়ি ঠেলতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে বলে জানান তিনি।
শুধু ঠেলাগাড়িচালক মহিউদ্দিন ও রুবেল মিয়াই নন, রাজধানীতে ভ্যাপসা গরমে দিনমজুর থেকে শুরু করে সব শ্রেণি পেশার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর জীবন ও জীবিকার তাগিদে সকাল হতে রাজধানীর পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে লাখো মানুষের ছুটে চলা শুরু হয়।
সোমবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ও মঙ্গলবার ভোরে বৃষ্টি হওয়ায় অনেকেই ভেবেছিলেন ভ্যাপসা গরম পড়বে না। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভ্যাপসা গরম বাড়তে থাকে। একদিকে ভ্যাপসা গরম অন্যদিকে রাজধানীজুড়ে গণপরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনের কারণে সড়কে ব্যাপক যানজট। কোনো কোনো সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে নির্দিষ্ট কিছু সড়কে রিকশার জটও বাড়ে। যানজটের কারণে অসংখ্য মানুষের নির্দিষ্ট গন্তব্য পৌঁছাতে বিলম্ব হতে দেখা যায়।
Advertisement
মঙ্গলবার সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, লকডাউনের আগের মতো রাজধানীর বিভিন্ন সড়কজুড়ে ভীষণ যানজট। রাজধানীর নীলক্ষেত, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, হাতিরপুল থেকে কাঁটাবন হয়ে শাহবাগের রাস্তায় তীব্র যানজটের কারণে রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে দেখা যায়। রাজধানীর মৎস্য ভবন, সচিবালয়, গুলিস্তান, পল্টন ও বিজয়নগরসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে দীর্ঘসময় যানজটে পড়ে যানবাহন আটকে থাকতে দেখা যায়। এ সময় গরমে যানজটের কারণে ব্যাপক দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন এসব সড়কে চলাচলকারী মানুষ।
এদিকে ২৪ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এমইউ/এআরএ/জিকেএস
Advertisement