চলতি মৌসুমে আগাম জাতের শিম চাষ করে আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হচ্ছেন মাগুরার কৃষকরা। ভালো ফলন ও বেশি দামে বিক্রি করতে পারায় কৃষকরা ভীষণ আনন্দিত। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া আগাম শিম চাষের জন্য বেশ উপযোগী। ফলন ভালো হওয়ায় প্রতিবছর বাড়তে শুরু করেছে আগাম শিম চাষির সংখ্যা।
Advertisement
সদর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছরে শিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৮০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু অনুকূল আবহাওয়া ও ভালো ফলনের কারণে চাষ হয়েছে প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে। এই অঞ্চলে আগাম চাষের জন্য ‘রূপবান’ ও ‘ইফশা’ নামের দু’টি জাতের শিম চাষ করা হয়। জৈষ্ঠ্য মাসের শেষের দিকে শিমের বীজ বপন করেন চাষিরা।
সাধারণত বীজ বপনের ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে শিমের লতায় ফুল আসতে শুরু করে। অতি বর্ষা না হলে প্রায় ৫ মাস স্থায়ী হয় শিমের মাচা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে ফুলে ফুলে শোভা পাচ্ছে শিমের মাচা। মাগুরা, ফরিদপুর সড়কের বেলনগর গ্রামে গেলে রাস্তার দু’ধারে দেখা যায় নীল-বেগুনি রঙের শিম ক্ষেতগুলোর নয়ানাভিরাম দৃশ্য। শিমের রুগ্ন ফুল ছাড়িয়ে ফেলা, ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করা এবং কীট-পতঙ্গ প্রতিরোধসহ নানা কাজে সময় পার করছেন শিম চাষিরা।
বেলনগর গ্রামের শিম চাষি বাবু মিয়া বলেন, ‘প্রায় ৮ থেকে ৯ বছর ধরে শিম চাষ করে আসছি। কম বেশি প্রতি বছরই লাভবান হচ্ছি। এ বছরও বাজারে শিমের দাম ভালো। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে। এ বছরে ১ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। শিম বিক্রি করে পেয়েছি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। অতি বর্ষা না হলে আশা করছি ৬০-৭০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করতে পারব’।
Advertisement
একই গ্রামের শিম চাষি আহম্মদ জানান, দশ কাঠা জমিতে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৮-৯ হাজার টাকা। তিনি বিক্রি করেছেন ৫-৬ হাজার টাকার শিম। তিনিও আশা করছেন এ বছরে অন্য বছরের তুলনায় বেশি লাভ হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক জগো নিউজকে জানান, মাগুরায় আগাম শিম চাষ সম্ভাবনাময়। এখানকার মাটি শিম চাষের জন্য উপযোগী। তিনি বলেন, আগাম শিম চাষের জন্য অন্তরায় হলো অতিরিক্ত বর্ষার পানি। অতিরিক্ত বর্ষার পানি ক্ষেতে জমে থাকলে স্যাঁতস্যাঁতে মাটিতে শিম গাছের গোড়ায় নেমাটট (কৃমি জাতীয় পোকা) আক্রমণ করে। নেমাটটের আক্রমণ গাছের শিকড় নষ্ট করে দেয়।
যে কারণে গাছ মারাও যেতে পারে। তাছাড়া অতিরিক্ত বর্ষা হলে শিমের ফুল পচে কুশি গজানোর ক্ষমতা হারিয়ে যায়। শিম গাছের গোড়া পঁচা রোগ দেখা দিলে ছত্রাক নাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এছাড়া পানিতে পরিমিতভাবে বোরিক এসিড মিশিয়ে স্প্রে করলেও উপকার পাওয়া যেতে পারে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
মো. আরাফাত হোসেন/এমএমএফ/এমএস
Advertisement