সঞ্চয়পত্র কেনার সময় ফরমে নমিনির নাম উল্লেখ করতে হয়। কারণ সঞ্চয়পত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে নমিনি। অনেকেই নমিনির নাম উল্লেখ করেন না। নমিনি একাধিকও (দুজন) হতে পারেন। কোনো কারণে গ্রাহক মারা গেলে টাকা পাবেন নমিনি।
Advertisement
জানা যায়, মূল গ্রাহক মারা গেলে নমিনি বা উত্তরাধিকারীরা কীভাবে তা পরিচালনা করবেন বা নগদায়ন করবেন, সে ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ‘কেস-টু-কেস’ ভিত্তিতে এ ধরনের অভিযোগের সমাধান করে থাকে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গ্রাহক মারা গেলে সঞ্চয়পত্রের মালিকানা নমিনির নামে স্থানান্তর করা হয়। তিনি টাকা নগদায়নও করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ৫ ধরনের তথ্য ও কাগজপত্রের দরকার হয়। সেগুলো হচ্ছে—
১. নমিনির স্ব-ব্যাখ্যায়িত একটি আবেদন ২. মূল গ্রাহকের মৃত্যুসনদের সত্যায়িত অনুলিপি ৩. গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি ৪. নমিনির ব্যাংক হিসাবের তথ্য ও মুঠোফোন নম্বর ৫. সঞ্চয়পত্র ইস্যু করা প্রতিষ্ঠান প্রধানের সুপারিশপত্র।
Advertisement
১৯৭৭ সালের সঞ্চয়পত্র বিধি অনুযায়ী, নমিনির অনুকূলে সঞ্চয়পত্র স্থানান্তর অথবা নগদায়ন করতে হবে। একই বিধি অনুযায়ী সঞ্চয়পত্র ইস্যু কর্মকর্তাই নগদায়ন করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত। আগে যে কাউকে নমিনি করা যেত। এ ধরনের সুযোগ এখন তেমন নেই। অনলাইন পদ্ধতি চালু হওয়ার পর পুরো ব্যাপারটি অনেক স্বচ্ছ হয়েছে।
তবে নমিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে সঞ্চয় অধিদপ্তর সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে মালিকানা ঠিক করবে। তার আগে অভিভাবকত্ব সনদ নিতে হবে আদালত থেকে। পরে ইস্যু অফিসে তা দাখিল করতে হবে। সে ক্ষেত্রে নগদায়ন হবে আদালতের নিয়োগ করা অভিভাবকের অনুকূলে।
সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক যদি নমিনি ঠিক না করে থাকেন বা গ্রাহকের আগে নমিনি মারা যান, তাহলে অধিদপ্তরসহ অন্য পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নমিনি না থাকলে তথ্য ও কাগজ লাগবে ৮ ধরনের। সেগুলো হচ্ছে—
১. আদালত থেকে উত্তরাধিকার সনদ (সাকসেশন সার্টিফিকেট) ২. নমিনির পক্ষ থেকে বিশদ বিবরণসহ ইস্যু কর্মকর্তার কাছে সাদা কাগজে আবেদন৩. চিকিৎসক এবং স্থানীয় সরকারের (ইউনিয়ন, পৌরসভা, কাউন্সিলর) কাছ থেকে গ্রাহকের মৃত্যুসনদ বা মৃত্যু নিবন্ধন ৪. নমিনির নাগরিক সনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি ৫. নমিনি সবার ২ কপি করে পাসপোর্ট আকারের ছবি৬. নমিনির স্বাক্ষর সত্যায়িত সনদ ৭. যথাযথভাবে পূরণ করা তদন্ত ফরম ৮. নমিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে পারিবারিক আদালতের অভিভাবকত্বের সনদ।
Advertisement
তবে সঞ্চয়পত্রের একজন গ্রাহক মারা গেলে মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী সম্পত্তি যেভাবে বণ্টন হওয়ার কথা, তার সঙ্গে না মিলিয়ে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকরা অন্য কাউকে নমিনি করলেই জটিলতা বাড়ে। এছাড়া নমিনির নাম থাকলেই যে তিনি টাকা পাবেন, এমন নয়। নমিনি হচ্ছেন এজেন্ট। তার দায়িত্ব হচ্ছে টাকা তুলে উত্তরাধিকারদের দিয়ে দেওয়া। এজেন্ট মারা গেলে তার ছেলেমেয়েরা নিশ্চয়ই উত্তরাধিকারসূত্রে এজেন্ট হবেন না।
এসইউ/জিকেএস