লাইফস্টাইল

পিসিওডি সারাবে ৬ চা

চা খেতে সবাই ভালোবাসে। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এক পানীয় হলো চা। প্রতিদিনের জীবনে চায়ের বিকল্প নেই। মন খারাপের সঙ্গী, প্রিয়জনের সঙ্গে আড্ডা কিংবা পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর সময়ে হাতে চায়ের মগ না থাকলে ঠিক যেন জমে ওঠে না।

Advertisement

তবে জানেন কি, রং চা কিংবা দুধ চা নয়; স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আরও বিভিন্ন ভেষজ উপাদানের চা খেতে পারেন। আসলে প্রতিদিন আমরা যে ধরনের মুখরোচক চা খেয়ে থাকি; সেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ততটা উপকারী নয়। বিশেষ করে চায়ের সঙ্গে চিনি মেশালেই তাতে আর উপকার মেলে না।

বরং প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান দিয়ে যেসব চা তৈরি করা হয়; সেগুলো শরীরের বিভিন্ন রোগ সারাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে অনিয়মিত ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে অনেক নারীই পিসিওডি (পলিসিস্টিক ওভারি ডিজিজ) ও পিসিওএস (পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম) এর সমস্যায় ভুগে থাকেন।

স্ট্যাটিস্টা রিসার্চ ডিপার্টমেন্টের সাম্প্রতিক জরিপে বলা হয়েছে, ২০-২৯ বছর বয়সী প্রায় ১৬ শতাংশ ভারতীয় নারীরা পিসিওডি’র সমস্যায় ভুগে থাকেন। পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম একটি হরমোনজনিত ব্যাধি, যা নারীর প্রজনন স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।

Advertisement

গবেষণা অনুসারে, প্রতি ৫ জন ভারতীয় নারীর মধ্যে অন্তত একজন এ সমস্যায় ভুগে থাকেন। এ রোগের সমাধান হলো লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনা। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ ও নিয়মিত শরীরচর্চা করলে এ সমস্যা অনেকটাই কমে আসে।

তবে জানেন কি, পিসিওডি সমস্যার সমাধান করতে পারেন ভেষজ চায়ের মাধ্যমে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু পিসিওডি’র সমস্যা নয়; ভেষজ চা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। সেইসঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, দুশ্চিন্তা, ফ্লু, অনিদ্রা, বদহজমের মতো রোগ সারাতে পারে।

এখন প্রশ্ন হলো, কীভাবে এবং কোন চা পিসিওএস/পিসিওডি নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে? লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি ৬ ধরনের চা নিয়মিত খেলে দ্রুত পিসিওডি’র সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। জেনে নিন উপকারী ৬টি ভেষজ চা সম্পর্কে-

ক্যামোমাইল চা

Advertisement

ক্যামোমাইল চা মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি দেয় তাৎক্ষণিক। উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে এই চা। পিসিওএস আক্রান্তরা আবেগপ্রবণ হয়ে থাকেন।

তাদের দ্রুত মেজাজ পরিবর্তন হয়। তাই মানসিক প্রশান্তি পেতে পান করতে পারেন ক্যামোমাইল চা। এটি পিসিওএস সংক্রান্ত শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা সারাবে।

পেপারমিন্ট চা

অনেক পিসিওএস নারীরা অনিয়মিত মাসিকের সমস্যায় ভুগেন। এছাড়াও যখন মাসিক হয়; তখন খিঁচুনি, পেট ব্যথা, শরীর ফুলে যাওয়া, মেজাজ পরিবর্তন ইত্যাদি সমস্যা কাটাতে পুদিনা পাতার চা খুবই উপকারি।

এতে থাকে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যসমূহ বিভিন্ন প্রদাহ কমায়। এমনকি হজম স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।

ওলং চা

ক্যামেলিয়া সিনেনসিস গাছের পাতা থেকে তৈরি হয় ওলং চা। এতে থাকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী পুষ্টি উপাদান, প্রদাহবিরোধী, অ্যান্টি ভাইরাল এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। যা শারীরিক সমস্যাও কমায়, অন্যদিকে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ব্রণ সারায়।

দারুচিনি চা

দারুচিনি জরায়ু ফাইব্রয়েড, পিসিওএস (পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম), ওজন হ্রাস, এমনকি মাসিক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নারীর প্রজনন ক্ষমতা উন্নত করতে সহায়তা করে।

আদা তুলসী চা

আদা তুলসী চা শরীরের ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে এন্ড্রোজেন হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। এই চায়ে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। আদা নারী হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

আদা তার প্রদাহবিরোধী গুণাবলীর জন্য সুপরিচিত এবং ঘন ঘন বমি ভাব দূর করতে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও আদা মাসিকের যন্ত্রণা, মুড সুইং এবং মাথাব্যথার মতো উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ল্যাভেন্ডার চা

মাসিকের যন্ত্রণায় অনেক নারী রাতে ঘুমাতে পারেন না। সেক্ষেত্রে পান করতে পারেন ল্যাভেন্ডার চা। এটি সবসময় মানুষের উপর একটি শান্ত প্রভাব ফেলে। তাই ল্যাভেন্ডার চা আপনাকে মানসিক প্রশান্তি দেবে ও ঘুমাতে সাহায্য করবে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

জেএমএস/জিকেএস