একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত হন মাহাবুব রশিদ। তিনি তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ছিলেন। মাহাবুব রশিদের বাবা হারুন অর রশিদ ও মা হাসিনা বেগম এখনও বেঁচে আছেন। তবে তারা ভালো নেই।
Advertisement
শারীরিক নানা অসুখ-বিসুখ আর সংসারে অভাব-অনটন যেন তাদের নিত্যসঙ্গী। এই বয়সে এসে এখন তাদের কোনো প্রত্যাশাও নেই। ছেলের স্মৃতি আঁকড়ে ধরে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন বৃদ্ধ এই দম্পতি।
করোনা পরিস্থিতিতেও সরকারি কোনো সহায়তা জোটেনি এই পরিবারটির। সারাবছর ধরে গরুর দুধ বিক্রি করে জমানো সামান্য টাকা দিয়ে এ বছর ছেলের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবেন এই দম্পতি। কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামে নিজ ঘরের বিছানায় বসে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কথা বলছিলেন নিহত মাহাবুবের অশীতিপর বুদ্ধ বাবা হারুন অর রশিদ এবং মা হাসিনা বেগম (৭৫)। তারা জানান, তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো না। শরীরে নানা অসুখ বাসা বেঁধেছে। এখন আর বুক ভরে শ্বাস নিতে পারেন না।
নিহত মাহাবুব রশিদের স্ত্রী ও দুই ছেলে ঢাকায় থাকেন। দুই নাতি বড় হয়ে বাবার মুখ উজ্জ্বল করবেন, এখন এই স্বপ্ন দেখেন এই বৃদ্ধ দম্পতি। মাহাবুব রশিদের বাবার অভিযোগ, প্রতি বছর এই দিনটি (একুশে আগস্ট) এলে টেলিভিশনে দোষীদের শাস্তি বায়বায়নের নানা খবর শোনেন। কিন্তু দিবসটি চলে গেলে সবাই যেন সবকিছু ভুলে যায়। মৃত্যুর আগে হলেও ছেলের হত্যাকারীদের বিচারের রায় বাস্তবায়ন দেখে যেতে চান এই দম্পতি। নিহত মাহাবুব রশিদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও কবরস্থানে বিদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
Advertisement
সংসারে অভাবের কথা বলতে গিয়ে বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চরম করোনা পরিস্থিতিতেও এক ছটাক সরকারি কোনো সহযোগিতা তারা পাননি।
ছেলের মৃত্যুবার্ষিকী কীভাবে পালন করবেন জানতে চাইলে হাসিনা বেগম বলেন, প্রতিমাসে কল্যাণ ফান্ড থেকে যে টাকা দেওয়া হয় তা দিয়ে দুজনের সংসারই ঠিকমতো চলে না। তাই প্রতি বছর গরুর দুধ বিক্রি করে জমানো টাকা দিয়ে ছেলের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে আসছেন। এবারও দুধ বিক্রির জমানো টাকা দিয়ে বাড়িতে মিলাদ-মাহফিলের আয়োজন করেছেন।
আল-মামুন সাগর/এসআর/জিকেএস
Advertisement