আফগানিস্তান তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর চলতি সপ্তাহে চরম ধাক্কা খেয়েছে দেশটির অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। বাজারে তৈরি হয়েছে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট। টানা কয়েক সপ্তাহের অচলাবস্থার কারণে দেশটিতে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম। লোকজন দেশ ছাড়ার ভয়ে অতিরিক্ত টাকা তুলে নিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে। ফলে তারল্য সংকটে পড়েছে ব্যাংক-বীমাসহ বহু আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কমেছে শেয়ারবাজারের লেনদেনও।
Advertisement
এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাড়ে নয়শ কোটি ডলারের সম্পদ জব্দ করেছে। ফলে ক্ষমতা দখল করলেও নিজ দেশের প্রায় হাজার কোটি ডলার হাতে পাচ্ছে না তালেবান।
এদিকে, আফগানিস্তানের জন্য নতুন করে বরাদ্দ ৪৪ কোটি ডলারসহ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সব ধরনের সম্পদে আফগানদের প্রবেশাধিকার সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইক মাস ঘোষণা দেন, যদি তালেবান দেশটি দখল করে নেয় এবং শরিয়া আইন প্রবর্তন করে, তবে আমরা এক পয়সাও দেব না। অন্য দাতারাও দেশটির পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
Advertisement
আফগানিস্তানে ২০ বছরের তালেবান-যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের অবসান ঘটলেও অর্থনীতিতে চরম বিপর্যয়ে পড়েছে দেশটি। স্বল্প উৎপাদনশীল দেশটির কৃষিখাতই ভরসা। মোট ৬০ শতাংশ পরিবার কৃষি থেকেই আয় করে। দেশটিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদও রয়েছে। একটি বড় অবৈধ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে, তা হলো আফিম উৎপাদন। যদিও এরইমধ্যে আফিম উৎপাদনের বিকল্প হিসেবে কৃষকদের অন্যান্য চাষাবাদে উৎসাহিত করার কথাও বলেছে তালেবান।
তালেবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিয়ে এক ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে দেশটির জন্য অন্যান্য দেশ থেকে সহজেই অর্থনৈতিক সহায়তা পাওয়া অনেকটা দূরুহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসা পর্যন্ত আফগানিস্তানের অর্থনীতির উন্নতির সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। যদিও তালেবান ক্ষমতায় বসে আগে অর্থনীতি পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এসএনআর/টিটিএন/এএসএম
Advertisement