দেশজুড়ে

পর্যটকের পদভারে মুখর হবে পাহাড়, আশায় ব্যবসায়ীরা

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে সাড়ে চার মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) খুলেছে পর্যটনকেন্দ্রের দুয়ার। খুলে দেয়া হলো হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন এলাকার বিনোদনকেন্দ্রগুলোও। এতে সারাদেশের মতো পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির পর্যটনশিল্প সংশ্লিষ্টদের মাঝেও স্বস্তি ফিরে এসেছে। আশা করা হচ্ছে, আজ থেকেই মুখর হবে পাহাড়ের পর্যটন, গতি আসবে সংশ্লিষ্টদের জীবন-জীবিকায়।

Advertisement

খাগড়াছড়ির কয়েকটি পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ১২ আগস্ট সরকারের তরফ থেকে পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ার ঘোষণা এলেই সংশ্লিষ্টরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তখন থেকেই পর্যটনকেন্দ্র এবং হোটেল-মোটেলগুলো পর্যটকদের বরণে প্রস্তুতি শুরু করে। বৃহস্পতিবারের আগেই সবার প্রস্তুতি শেষ হয়।

হোটেল-মোটেল মালিকরা জানান, দীর্ঘদিন তাদের হোটেলে পর্যটক ছিল না। এজন্য ধুলো-ময়লা জমে গেছে। এখন যেহেতু পর্যটনকেন্দ্র খুলে গেছে, এবার পর্যটক আসতে শুরু করবে। তাই হোটেল-মোটেল ভালোভাবে সাজানো-গোছানো হয়েছে। তাদের বিশ্বাস ঠিক আগের মতোই পর্যটকে মুখরিত হবে হোটেল-মোটেল এবং পর্যটনকেন্দ্র। ‘হোটেল গাইরিঙ’র তত্বাবধায়ক প্রান্ত ত্রিপুরা বলেন, সরকারি ঘোষণার পর পর্যটকদের বরণ করতে আমাদের হোটেল প্রস্তুত করেছি। আশা করছি পর্যটকদের আগমনে আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠবে আমাদের ব্যবসা।

পর্যটক বহনকারী মাহিন্দ্রার চালকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন শত শত শ্রমিক। পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ায় তাদের কর্মক্ষেত্রে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে।

Advertisement

‘আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র’র উপহার উপজাতি হস্তশিল্প ও বার্মিজ স্টোরের ম্যানেজার হরনা ত্রিপুরা বলেন, দীর্ঘসময় পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় দোকানের পণ্যসামগ্রীতে ধুলো ময়লা জমেছিল। তবে এখন আমরা দোকানের পণ্য গোছগাছ করে সাজিয়েছি।

পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করছি পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ার মাধ্যমে আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবো।

আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রের জুস কর্নার ও কফি হাউজের ব্যবস্থাপক মো. সাদেকুর রহমান বলেন, পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ার মাধ্যমে আমরা ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছি।

পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ার ঘোষণায় উচ্ছ্বসিত আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রের তত্বাবধায়ক কোকোনাথা ত্রিপুরা বলেন, পর্যটকদের বরণ করতে আমরা প্রস্তুত। আশা করছি আবারও পর্যটকে মুখরিত হবে আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। আর আমরাও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো। তবে পর্যটনকেন্দ্রে মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না।

Advertisement

খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ইউনিট ব্যবস্থাপক একেএম রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা আর পর্যটন করপোরেশনের গাইডলাইন অনুযায়ী পর্যটকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি কক্ষে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী রাখা হয়েছে।

গত বছরের মার্চে করোনার প্রকোপ দেখা দেয়ার পর থেকেই ধুঁকছে দেশের পর্যটনশিল্প। ওই বছরের শেষ দিকে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে কিছুটা সমাগম বাড়লেও এ বছরের ১ এপ্রিল থেকে ফের কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয় সরকার। এরপর থেকে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে পাহাড়ের পর্যটনকেন্দ্র। ফলে দিন দিন বাড়তে থাকে এ খাতের ক্ষতি। পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীদের ক্ষতি দাঁড়িয়েছে শত কোটি টাকা। পুঁজি হারিয়ে অনেকেই প্রায় নিঃস্ব।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এইচএ/জিকেএস