ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল আবাসিক এলাকায় মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তাইজুল ইসলাম তাজুল (৩৮) ও মোহাম্মদ সজীব (৩৫) নামে দুই ভাই নিহত হন।
Advertisement
র্যাব বলছে, নিহত তাজুল ও সজীব ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ডাকাতিতে জড়িত ছিলেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে তাজুলের নামে হত্যা, ডাকাতিসহ সাতটি এবং সজীবের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে।
বুধবার (১৮ আগস্ট) র্যাব-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি এনায়েত কবীর সোয়েব জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে নিহত সজীব দিন-দুপুরে অটোরিকশা ছিনতাই, অটোরিকশা মালিকের কাছ থেকে টাকা আদায় এবং টাকা না পেলে মালিকদের মারধর করতেন। তার বিকাশে প্রায় ৮০-৯০ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য রয়েছে। সজীবের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির দুটি মামলা ছাড়াও একটি করে ডাকাতি, অস্ত্র ও হত্যা মামলা রয়েছে।’
Advertisement
এএসপি এনায়েত কবীর সোয়েব বলেন, বন্দুকযুদ্ধে নিহত তারই আরেক ভাই তাজুল কেরানীগঞ্জে মোটরসাইকেল, সিএনজি, অটোরিকশা ছিনতাই ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা, একটি অস্ত্র মামলা এবং দুটি ডাকাতির প্রস্তুতিসহ মোট সাতটি মামলা রয়েছে।
র্যাব-১০ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঝিলমিল আবাসিক এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার খবর পেয়ে র্যাব সদস্যরা সেখানে অভিযানে চালান। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ‘ডাকাতরা’ গুলি ছুড়তে শুরু করে। আত্মরক্ষার্থে র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়।
এ সময় র্যাবের তিন সদস্য আহত হন। তারা হলেন এএসআই শফিকুল ইসলাম, নায়েক জাকিরুল ইসলাম ও কনস্টেবল মশিউর রহমান।
পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ দুই যুবককে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
Advertisement
নিহত তাজুল ও সজীবের পরিবারের দাবি, গত ২৩ জুলাই সজীবকে এবং ২৫ জুলাই তাজুলকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া যায়। পরে পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।
নিহতদের মা তাসলিমা বেগম বলেন, ‘গত ২৩ জুলাই সজীবকে বাড়ির পাশ থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর ২৫ জুলাই তাজুলকে একইভাবে ধরে নিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমার দুই ছেলে কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরে মাছের ঘেরের ব্যবসা করতেন। থানায় মাদকের মামলা ছিল। কিন্তু কোনো খুনের মামলা ছিল না। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মাছের ঘের নিয়ে আমার দুই ছেলের ঝগড়া হয়। এ নিয়ে এলাকার প্রভাবশালীরা ধরিয়ে দিয়েছে বলে সন্দেহ করছি।’
নিহত সজীবের স্ত্রী নাজনীন আক্তার ও তাজেলের স্ত্রী মিনা আক্তার জানান, তারা পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে মর্গে এসে দুজনের মরদেহ শনাক্ত করেছেন।
তারা জানান, সজীব ও তাজুলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তারা খবর পেয়ে র্যাব-১০ এর অফিসে গেলে জানানো হয়, র্যাব-১১তে খবর নেন। তারা র্যাব-১১তে গেলে সেখান থেকে র্যাব-হেডকোয়ার্টারে যেতে হয়।
তারা আরও বলেন, আমরা ওখানে গেলে আমাদের সঙ্গে র্যাব সদস্যরা কোনো কথা বলেননি। পরে আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাদের খোঁজ পাই না। পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতাল মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করি।
টিটি/এএএইচ/এএসএম