দেশজুড়ে

না.গঞ্জে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ২, আহত ২০

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটিতে এক পুলিশ সদস্য ও ট্রাক স্ট্যান্ডের শ্রমিককে মারধরের ঘটনার জের ধরে দুই পক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষে পুলিশ অফিসারসহ অন্তত ২০জন আহত হয়েছন। সোমবার দুপুরে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কের পঞ্চবটি মেথরখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ২ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, পঞ্চবটি ট্রাক স্ট্যান্ডের জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য আমিনুল ইসলাম বেলা সাড়ে ১১ টায় মাসদাইর হতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে পঞ্চবটি যাচ্ছিল। পথিমধ্যে জেলা পুলিশ লাইন থেকে ওই অটোতে উঠে পুলিশের কনস্টেবল আজাদ। রিকশায় ওই সময়ে দুইজন নারী বসা ছিল। অটোতে বসা নিয়ে আজাদ ও আমিনুলের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে আমিনুলকে বেদম মারধর করে আজাদ। আমিনুল পঞ্চবটি আসার পর আজাদ কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে আবার আমিনুলকে মারধর করে আট করে রাখে। ঘটনার খবর পঞ্চবটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সেখানে ট্রাক স্ট্যান্ডের শ্রমিকেরা জড়ো হয়। সেখানে আজাদকে মারধর করে স্ট্যান্ডের লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ আসলে শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে ট্রাক টার্মিনালের লোকজন বেশ কয়েকটি ট্রাক রাস্তায় রেখে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ ট্রাক টার্মিনালে গেলে ট্রাক শ্রমিকরা পুলিশদের ধাওয়া করলে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে পুলিশ সদস্য ট্রাক শ্রমিকদের ধাওয়া খেয়ে পঞ্চবটি অ্যাডভাঞ্চার পার্কে আশ্রয় নেয়। সেখানে শ্রমিক পুলিশদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে পুলিশ শ্রমিকদের বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। পুলিশের পিস্তলসহ শর্টগানের গুলিতে পিছু হটে শ্রমিকরা। শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে প্রায় আধা ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়। এতে করে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ট্রাক শ্রমিকরা জাগো নিউজকে জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের কনেস্টবল আজাদ ট্রাক শ্রমিক আমিনুলকে ব্যাপক মারধর করে। এতে শ্রমিক আমিনুল পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও মারধর করে আটক করে রাখে। পরে অন্য শ্রমিকরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করতে এলে পুলিশ সদস্য আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। এরপর পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ শ্রমিকদের প্রতিহত করতে পিস্তলসহ শর্টগান দিয়ে বৃষ্টির মত গুলি করতে থাকে। এতে দুইজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। এদিকে সংঘর্ষে ফতুল্লা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই গোলাম মোস্তফা, এসআই কাদির, কনস্টেবল আজাদ এবং শ্রমিক আলামিন, জাকির, এনায়েত, হাসান, রহিম, ফারুকসহ মোট ২০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে আবদুর রহিম ও ফারুক হোসেন নামের দুইজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ট্রাকস্ট্যান্ডের এক শ্রমিক নেতার মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতি ঘটে। ওই ঘটনায় শ্রমিকেরা পুলিশ সদস্যকে মারধর করলে পুলিশ বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পুলিশ পরে লাঠিচার্জ ও কয়েক রাউন্ড গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  শাহাদাত হোসেন/এসএস/আরআইপি

Advertisement