সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদাকে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে যৌথ অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট। এতে অবসান ঘটে তালেবান শাসনের। এরপর ‘শান্তিরক্ষার স্বার্থে’ সেখানে ঘাঁটি গেড়ে অবস্থান নেয় পশ্চিমা সেনারা।
Advertisement
সবশেষ ২০২১ সালে এসে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা আফগানিস্তান ছাড়লে ফের ক্ষমতার মসনদে বসে তালেবান। কিন্তু দীর্ঘ এই লড়াইয়ে শেষপর্যন্ত কে জিতেছে? এমন হিসাব-নিকাশের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ও লেখক মাইকেল মুর রোববার (১৫ আগস্ট) ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। যা এখন তুমুল আলোচনার কেন্দ্রে।
শুরুতেই তিনি লিখেন- ‘আরেকবার পতন। যুক্তরাষ্ট্র হেরেছে আরেকটি যুদ্ধে। দীর্ঘতম যুদ্ধ এটি আমাদের। এতে আমরা খরচ করেছি দুই ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি।’
এরপর মাইকেল মুর লিখেন, ‘আমরা এমন একটি দেশে আক্রমণের জন্য দুই হাজার ৩০০ জনের বেশি মার্কিনীর জীবন উৎসর্গ করেছি, যেখানে বিন লাদেনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বুশ বলেছিলেন যে, লাদেনকে বন্দি করার ব্যাপারে তার কোনো আগ্রহ নেই। অথচ ওবামার দল তাকে পাকিস্তানের পশ্চিম অঞ্চলের একটি বাড়িতে খুঁজে পেয়েছিল।’
Advertisement
মার্কিন এই পরিচালক আরও বলেন, ‘আমরা হানাদার। তালেবানরা হানাদার নয়, তারা আফগান। এটা তাদের দেশ! তারা কেবল ধর্ম পাগল।’
আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা পাঠানোর সমালোচনা করে মাইকেল মুর লিখেন, ‘কি মর্মান্তিক ঘটনা। পেন্টাগন, মিলিটারি ইন্ড্রাস্টিয়াল কমপ্লেক্স, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি- তারা আমাদের তরুণ সৈন্যদের মৃত্যুর জন্য পাঠিয়েছে। লজ্জা!’
২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেদিন বিমান ছিনতাইকারী ১৯ জনের মধ্যে ১৫ জন ছিল সৌদি আরবের। কিন্তু বুশ কেন সৌদিতে আক্রমণ করেনি?’
মাইকেল মুর লিখেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমরা এই দেশ প্রতিরক্ষায় জিতিনি। বরং আমরা এমন একদল মানুষের কাছে পরাজিত হয়েছি, যাদের না আছে বোমারু বিমান, না ক্ষেপণাস্ত্র, না কোনো হেলিকপ্টার। আমরা পরাজিত হয়েছি শুধুমাত্র পিকআপের একদল ছেলের কাছে।’
Advertisement
এদিকে রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে নিয়েছে তালেবান। ইতোমধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট প্যালেসের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা। প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারা প্যালেস দখল করে নেয়।
জেডএইচ/