ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য একটি অধ্যায়। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর আপসহীন নেতৃত্ব বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।’
Advertisement
‘আমাদের একজন বঙ্গবন্ধু ছিলেন বলেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্টের নির্মম ঘটনাটি ছিল বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার নীলনকশা।’
রোববার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহাদাৎ হোসেন ও ডাক বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হারুনুর রশীদ বক্তব্য দেন। বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
Advertisement
১৯৪৮ সাল থেকে আজকের দিন পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তরণের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, স্পেনের কাতালোনিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বাধীনতার জন্য বিচ্ছিন্ন আন্দোলন হচ্ছে কিন্তু তাদের অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ। একজন বঙ্গবন্ধু ছিলেন বলেই আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করতে পেরেছি। ১৯৭০-এর নির্বাচনে অংশ নিয়ে অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু এই নির্বাচনে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বের দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিলেন। এর ফলে বিশ্বে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ ছিল না। এরই ধারাবাহিকতায় বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক সমর্থক লাভ করে।
১৯৭১ সালে সংগ্রামে বিজয়ের জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের সফলতা তুলে ধরে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বহু আগেই স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতির জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রত্যেকের কাছে অনুকরণীয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের মায়েরা বঙ্গবন্ধুর জন্য রোজা রেখেছেন। আমার মাও যুদ্ধের নয় মাস বঙ্গবন্ধুর জন্য রোজা রেখেছেন, মৃত্যু ঝুঁকি জেনেও তিনি আমাকে বাবার চোখকে আড়াল করে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছেন।’
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বিশ্বের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধু শোষিত, বঞ্চিত, অসহায় দরিদ্র মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। তারই সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে কাজ করছেন। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারীদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
মূল প্রবন্ধে সাজ্জাদ আলী জহির বঙ্গবন্ধুর জীবনের চারিত্রিক দৃঢ়তা, তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক উপাখ্যান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপটসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দিক ও ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
Advertisement
পরে মন্ত্রী জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মো. মশিউর রহমান হুমায়ুনসহ প্রতিষ্ঠানের অনেকে বক্তব্য দেন।
এইচএস/এআরএ/জেআইএম