আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বহুল আলোচিত রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধোলাইপাড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় (ঢাকা-৪) সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা।
Advertisement
রোববার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর ধোলাইপাড়ে শ্যামপুর-কদমতলী থানা জাতীয় পার্টি আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্মরণ সভা ও খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাবলা এই ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও আছেন বাবলা।
সংসদ সদস্য আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘যখন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হচ্ছে তখন দাঁতভাঙা জবাব দিয়ে বলেছিলাম- দুনিয়ার কোনো শক্তি নেই...জাতির জনক যার জন্য বাংলার নদী-সাগর, পাহাড়, চাঁদ-সূর্য...এই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য...আমরা সেদিন বলেছিলাম, এইখানে হবে, দুনিয়ার কোনো শক্তি নাই।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সারা বাংলাদেশে বিশেষ করে শ্যামপুর-কদমতলীর আওয়ামী লীগের ভাইয়েরা, আমরা জাতীয় পার্টির সমস্ত ক্লাব, প্রতিষ্ঠান ঐক্যবদ্ধভাবে ইনশাআল্লাহ, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে...এখানে কয়দিন আগে নগরপিতা ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এসেছিলেন। আমাকে বলেছিলেন আঙ্কেল এখানে যে ফেস্টুন ব্যানার (ভাস্কর্য স্থাপনের জন্য ঘিরে রাখা স্থানের চারপাশের বেড়ায়) দিয়েছেন তা সুন্দর হয়েছে।’
Advertisement
‘এখানে অচিরেই উনি বলেছেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব, আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, এমপি এবং আমাদের শেখ ফজলে নূর তাপস...আই ডিক্লেয়ার্ড সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, অল আওয়ামী লীগার, অল জাতীয় পার্টি, মাননীয় মন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল আপনার সামনে বলছি ইনশাআল্লাহ, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের আগে বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের লাখ লাখ জনগণ পদ্মা সেতুতে যাবেন, এইখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য হবে, দুনিয়ার কোনো জঙ্গি-সন্ত্রাসী এটাকে রুখতে পারবে না, পারবে না, পারবে না, ইনশাআল্লাহ।’
যদিও প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে (মুজিববর্ষ) ধোলাইপাড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরপর এর বিরোধিতা শুরু করে হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামি কয়েকটি দল।
হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিম ভাস্কর্যের বিরোধিতা করে বিভিন্ন বক্তব্য দেন। তারা ভাস্কর্য স্থাপনকে শরিয়তবিরোধী আখ্যা দেন। এর মধ্যেই গত বছরের ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে কুষ্টিয়া শহরে বঙ্গবন্ধুর একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্যে ভাঙচুর চালানো হয়। তখন ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে অস্থিরতা বাড়তে থাকে। এই প্রেক্ষাপটে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর শীর্ষ আলেমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। এরপরই পরিস্থিতি শান্ত হয়। সেই থেকে ধোলাইপাড়ে ভাস্কর্য স্থাপনের কাজও আর এগোয়নি।
Advertisement
আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির ভাইস-চেয়ারম্যান সালমা হোসেন, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সানজিদা খানমসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য দেন।
আরএমএম/এআরএ/এএসএম