দেশজুড়ে

বর্ষায় বেলাই বিলের মোহনীয় রূপ

বেলাই বিল। গাজীপুর সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলার ঠিক মাঝখানে বিলটির অবস্থান। ৪০০ বছর আগে এ বিলে গ্রামের কোনো অস্তিত্ব না থাকলেও বর্তমানে বাড়িয়া, ব্রাহ্মণগাঁও, বরক্তাপুর ও বামচিনি গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে।

Advertisement

খরস্রোতা চিলাই নদীর কারণে বিলটিও খরস্রোতা হিসেবে পরিচিতি পায়। আট বর্গমাইলের এ বিলটি এক সময় আরও বড় ছিল। বিলের কোনো কোনো স্থানে সারা বছরই পানি থাকে। তবে বর্ষায় এর রূপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। জেলেরা বিলের চারপাশে গর্ত খনন করে মাছ ধরেন। আর শুষ্ক মৌসুমে বিলটি হয়ে উঠে এক ফসলি জমিতে।

বর্ষায় নতুন রূপ পায় বেলাই বিল। যেদিকে চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। জেলার আশপাশের উপজেলার মানুষগুলো ছুটে আসেন সাদা ও নীল শাপলায় আর শালুকে ভরা বেলাই বিলে। বিলে বুকে স্বচ্ছ টলটলে পানি মনকে দোলা দেয়।

ইঞ্জিনচালিত ও ডিঙি নৌকায় করে এসে বিলের অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন মানুষ। কেউ কেউ আবার ছোট লঞ্চও নিয়েও আসেন বিলে। তবে ইঞ্জিনের শব্দের চেয়ে শব্দ বিহীন ডিঙি নৌকাই ভালো। এখানকার সারি সারি তালগাছ বিলের সৌন্দর্যকে দিয়েছে মাত্রিকতা।

Advertisement

কালীগঞ্জ খেয়াঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে বিলে ঘুরতে এসেছেন ঢাকার একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত আবু জাফর সোহেল। তিনি বলেন, গত ২৩ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউনের কারণে অফিস বন্ধ। বাড়িতে বসে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছি। তাই বিলে ঘুরতে এসেছি।

বেলাই বিলে ঘুরতে আসা মুন্না বলেন, ঈদের পর কোথায় ঘুরতে যাওয়া হয়নি। ভেবেছিলাম কিশোরগঞ্জের নিকলি যাবো। কিন্তু দেশের এ পরিস্থিতির কারণে বন্ধুদের নিয়ে বেলাই বিলের গরীবের নিকলিতেই নৌকা নিয়ে ঘুরতে চলে আসলাম।

কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী রানা সরকার বলেন, খালের পাশেরই আমার বাড়ি। বর্ষায় শীতলক্ষ্যা নদী ও বেলাই বিলের পানি বেড়ে খালটিও ভরে যায়। আর এ খাল দিয়ে প্রতিদিন বহু ইঞ্জিন চালিত নৌকা বেলাই বিলে যান ভ্রমণ পিপাসুরা। দেখতে যেমন ভাল লাগে তেমনি নৌকা চালকদের বেশ আয়ও হয়।

কালীগঞ্জ খেয়াঘাটের মাঝি জামান মিয়া জানান, বর্ষা মৌসুমে একটু বাড়তি আয় রোজগার হয়। বিশেষ করে বিকেল হলে খেয়াঘাটে এসে নানা বয়সী মানুষ নৌকা ভাড়া করে বেলাই বিলে যান। এ মৌসুমে প্রতিদিনই তাদের ব্যস্ত থাকতে হয় এ ধরণের ভাড়া টানতে। তবে ১৫০০-২০০০ টাকা হলে নৌকা নিয়ে বেলাই বিল ঘুরে আসা যায় বলেও জানান তিনি।

Advertisement

আব্দুর রহমান আরমান/আরএইচ/এএসএম