আন্তর্জাতিক

শিশুরোগের মতো আচরণ করতে পারে করোনা!

কয়েক বছরের মধ্যে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগের মতো আচরণ করতে পারে। টিকা না নেওয়া কিংবা ভাইরাসের সংস্পর্শে না আসা যে কোনো শিশু হতে পারে আক্রান্ত।

Advertisement

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত গবেষণায় এ দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও নরওয়ের একদল গবেষক। গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নাল। খবর এনডিটিভির।

প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুদের ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের হার নিম্ন হওয়ার কারণে রোগটির প্রাদুর্ভাব কমে আসতে পারে। বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে সার্স-কভ-২ ভাইরাস পরিণত হতে পারে স্থানীয় রোগে।

নরওয়ের ওসলো ইউনিভার্সিটির গবেষক ওত্তার বর্নস্টাড বলেন, সার্স-কভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ করে যেটি পাওয়া যাচ্ছে তা হলো বয়স্করা টিকা নিলে বা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার ফলে সংক্রমণ ধীরে ধীরে শিশুদের মধ্যে স্থানান্তরিত হতে পারে।

Advertisement

গবেষণায় ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ করোনার বিভিন্ন ধরনও পর্যবেক্ষণ করা হয়। তিনি আরও বলেন, শ্বাসযন্ত্রের রোগের ঐতিহাসিক রেকর্ড থেকে জানা যায়, বয়স ও সংক্রমণের ধরন অনুযায়ী সেটি পরিবর্তন হতে পারে স্থানীয়ভাবে।

উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, বর্তমান করোনার জিনোম সিকোয়েন্সের অ্যাক্টিভিটিজ দেখে বোঝা যাচ্ছে, ১৮৮৯ থেকে ১৮৯০ এর মহামারি যেটি এশিয়াটিক বা রাশিয়ান ফ্লু নামে পরিচিত, যার কারণে ১০ লাখ মানুষের প্রাণ যায়, প্রাথমিকভাবে এটি ৭০ বছর বয়সীদের সংক্রমণ ঘটিয়েছিল। পরে দেখা যায় মৃদু উপসর্গ নিয়ে সংক্রমণ ৭ থেকে ১২ বছরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে হচ্ছে। এইচ-কভ-ওসি৪৩ ভাইরাস এটি, যা এখন স্থানীয় রোগে পরিণত হয়েছে।

ইমিউনিটি তৈরি হলেও পুনরায় সংক্রমণের ক্ষেত্রে সার্স-কভ-১ ভয়াবহ অভিহিত করে সতর্কতা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। এই গবেষক আরও বলেন, করোনার ডাটা-বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ভ্যাকসিনের কারণে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। তাই সবাইকে করোনা ভ্যাকসিন নিতে হবে। আর সেটা যত দ্রুত সম্ভব তত ভালো।

গবেষণা দলটি একটি বাস্তবসম্মত, বয়সনির্ভর গাণিত্যিক ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন। এতে তারা জনতত্ত্ব, সামাজিক মিথষ্ক্রিয়ার মাত্রা, সংক্রমণ এলাকা ও রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে আনার জন্য সম্ভাব্য কারণ, পরিস্থিতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণ করেন। যেটিকে তারা বলছেন, ‘রিয়েলিস্টিক এজ-স্ট্রাকচার্ড(রাস) ম্যাথমেটিক্যাল মডেল’।

Advertisement

গবেষকরা আরও বিশ্লেষণ করেন, রোগের তাৎক্ষণিক, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি আচরণ।

গবেষণা দলটি বলছে, ১১টি দেশের ডাটা পর্যালোচনা করা হয়েছে গবেষণায়। যেসব দেশের ডাটা নেয়া হয়েছে সেগুলো হলো- চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, যুক্তরাজ, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক জেসিকা মেটকাফ বলেন, এই গবেষণার তথ্য তখন ঠিক হতে পারে যদি পুনরায় সংক্রমণ মৃদুভাবে ঘটে।

এসএনআর/এএ/এএসএম