জাতীয়

দাঁড়িয়ে যাত্রী নিয়েই চলল গণপরিবহন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে ১৯ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শেষে সব ধরনের গণপরিবহন রাস্তায় চলাচল করছে। দীর্ঘদিন পর এবার ‘যত সিট, তত যাত্রী’ নিয়ে চলছে গণপরিবহন। তবে সরকারি নির্দেশনা ছিল, ‘কোনোভাবেই আসনের অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।’

Advertisement

বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর গণপরিবহন চলাচল শুরুর প্রথমদিনে সেই সিদ্ধান্ত মানছেন না অধিকাংশ বাসের চালক ও হেলপাররা। তারা সিট না থাকলেও বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে বাসে যাত্রী তুলছেন। বাধ্য হয়ে অনেক যাত্রীও দাঁড়িয়েই গন্তব্যে যাচ্ছেন।

বুধবার (১১ আগস্ট) সরেজমিনে রাজধানীর গুলিস্তান, পল্টন, শান্তিনগর ও মৌচাক এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া রাস্তায় অর্ধেক গণপরিবহন চলার কথা থাকলেও গাড়ির ব্যাপক চাপও দেখা যায়।

এদিন, বিকেলে অফিসফেরত যাত্রীদের বাড়তি চাপকে কাজে লাগিয়ে নির্দেশনা অমান্য করেই বাসে অতিরিক্ত যাত্রী তুলতে দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনেই গাদাগাদি করে যাত্রী তোলা হলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনো গাড়ি আটকাতে বা জরিমানা করার তথ্যও পাওয়া যায়নি।

Advertisement

এদিকে, দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করার বিষয়ে নানা অজুহাত আর যুক্তি দেখাচ্ছেন বাসচালকরা। চালকদের কেউ বলছেন, ‘সামনের স্টপেজ বাড়তি যাত্রী নেমে যাবে।’ আবার কেউ বলছেন, ‘যাত্রীরাই জোর করে গাড়িতে উঠেছেন।’

পল্টন মোড়ে দাঁড়িয়ে গাদাগাদি করে যাত্রী নেয়া আকাশ পরিবহনের চালক বলেন, ‘গুলিস্তানে এসব যাত্রী নেমে যাবে। কাকরাইল থেকে বাড়তি যাত্রী উঠেছে। তার আগে গাড়ি ফাঁকাই ছিল।’

৮ নম্বর বাসের চালক বলেন, ‘যাত্রীরাই ঠেলাঠেলি করে বাসে উঠছেন। সিট নাই বললেও তারা শুনছেন না। আমরা তো নির্দেশনা মানতে চাই, কিন্তু যাত্রী চাপের কারণে মানতে পারছি না।’

রাস্তায় যে সব পরিবহন অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে, তা নয়। কিছু পরিবহনকে আসন অনুযায়ী যাত্রী নিয়ে গেট বন্ধ করে চলাচল করতে দেখা গেছে।

Advertisement

অধিকাংশ বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী তোলায় স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকে যাত্রীর মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। অধিকাংশ বাসের সুপারভাইজার ও হেলপারকে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। যারা পরেছেন, তারাও থুতনির নিচে নামিয়ে রেখেছেন।

বিআরটিএ’র নির্দেশনা ছিল, গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, হেলপার এবং টিকিট বিক্রির কাজে নিয়োজিত প্রত্যেককে মাস্ক পরতে হবে। রাখতে হবে প্রয়োজনীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার। যাত্রার শুরু এবং শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

কিন্তু এসব বিষয়ে প্রথমদিনই যাত্রী এবং পরিবহন শ্রমিকরা সবাই ছিল উদাসীন। অনেকেরই মুখে মাস্ক ছিল না। থাকলেও সেটি থুতনিতে লাগিয়ে রেখেছিলেন। পরিবহনে জীবাণুনাশক অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।

পল্টন মোড়ে দায়িত্বরত ছিলেন ডিএমপি রমনার এসআই মনিরুল ইসলাম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্দেশনা না মানায় কিছু গাড়িকে জরিমানা করা হয়েছে। তবে এখন অফিসের ফিরতি সময় হওয়ার কারণে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবহন চালাতে হবে। তা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

এনএইচ/এএএইচ/এমএস