ভ্রমণ

এ সময় ভ্রমণে যা মেনে চলা জরুরি

দীর্ঘ ৪০ দিন লকডাউনের পর আজ (১১ আগস্ট) থেকে স্বাভাবিক হয়েছে দেশের পরিস্থিতি। চলছে গণপরিবহন, লঞ্চ, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহন। যদিও দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এখনও কমেনি, বরং বেড়েছে।

Advertisement

তবুও সরকারি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সব আসনে যাত্রী নিয়ে বাস, লঞ্চ ও ট্রেন চলাচল করবে। তবে যত যানবাহন চলাচল করার কথা, তার অর্ধেক চলার কথা বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অব্যাহত আছে। গত চারদিনে অন্তত এক হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে সবকিছু স্বাভাবিক হলেও করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা কিন্তু বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই এ রকম পরিস্থিতিতে দেশ-বিদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কি ধরণের সতর্কতা নেওয়া উচিত জেনে নিন-

Advertisement

>> বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো ভ্রমণের অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে স্বাস্থ্যের বিষয়ে সতর্ক থাকুন। করোনা নেগেটিভ হলে তবেই দেশের বাইরে যেতে পারেন।

>> দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে যেসব জেলা বা এলাকায় সংক্রমণের হার বেশি; সেসব স্থান এড়িয়ে চলুন।

>> যেকোনো পরিবহনে ভ্রমণের সময় যতটা সম্ভব শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন।

>> যেহেতু গণপরিবহনে সব আসনে যাত্রী বহন করা হবে, তাই যাত্রীদের নিজেদেরই বিশেষ সতর্কতা নিতে হবে।

Advertisement

>> যানবাহনের টিকেট কেনা থেকে শুরু করে ওঠা-নামা বা আসনের ক্ষেত্রে পাশের যাত্রীদের সঙ্গে যাতে শারীরিক স্পর্শ না হয়; সেদিকে খেয়াল রাখুন।

>> ভ্রমণের সময় অবশ্যই সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে তিন লেয়ার বিশিষ্ট মাস্ক ব্যবহার করুন। ২ বা ৩টি মাস্ক একসঙ্গে পরে বাইরে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

>> অনেকে সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করেন। কিন্তু সেটা আসলে শতভাগ সুরক্ষা দিতে পারে না। তাই ভ্রমণের সময় এন-৯৫ বা কেএন-৯৫ মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়াও বাইরে থাকলে মাস্ক খুলবেন না কখনও।

>> এ সময় বাইরের খাবার না খাওয়াই ভালো। কারণ খাওয়ার সময় মুখে মাস্ক থাকে না, যা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

>> হাত কখনও মুখে স্পর্শ করবেন না। অনেকেরই মুখে হাত দেওয়ার অভ্যাস থাকে। গণপরিবহণ ব্যবহারের সময় যতটা সম্ভব সিট, হাতল ইত্যাদি স্পর্শ করা থেকে এড়িয়ে চলুন।

>> আর স্পর্শ করে ফেললে সঙ্গে সঙ্গে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। ওই হাত দিয়ে মাস্ক খোলার চেষ্টা করবেন না। হাতে জীবাণু লেগে গেলে সেটা মুখ বা নাক থেকে শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

>> যারা লঞ্চে বা ট্রেনের কেবিনে ভ্রমণ করবেন, তারা নিজস্ব একটি চাদর বা কাপড় বহন করতে পারেন। এ ছাড়াও আসনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে স্যানিটাইজার স্প্রে ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত করে নিতে পারেন।

>> গণপরিবহন ব্যবহারকালে আপনার পাশের যাত্রী মাস্ক পরেছে কি-না খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে তাকে সজাগ ও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন।

>> একেবারেই জরুরি প্রয়োজন ছাড়াও এই করোনাকালে বাইরে কোথাও ভ্রমণ করা উচিত নয়। দেশে সংক্রমণের হার অত্যন্ত বেশি। বিশেষ করে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টি এ সময় এড়িয়ে চলুন।

>> যত দ্রুত সম্ভব করোনা টিকা গ্রহণ করুন। বিশেষজ্ঞরা বারবার পরামর্শ দিচ্ছেন সবাইকে টিকা গ্রহণের জন্য। বাংলাদেশে এখন গণ টিকা দেওয়া চলছে। টিকা নেওয়া থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটা কমে আসবে।

>> ভ্রমণকালে কখনও পথে কফ বা থুথু ফেলবেন না। শরীর আবৃত করে পোশাক পরুন। সেইসঙ্গে কিছুক্ষণ পরপর হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার বা হাত ধুয়ে ফেলুন, সহযাত্রীরে সঙ্গে যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখুন, নিজস্ব কিছু ওষুধ বহন করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

>> এ সময় ভ্রমণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গবেষণায় দেখা গেছে, বিমানের বায়ুপ্রবাহ নিয়ন্ত্রিত থাকায় এবং প্রতি ঘণ্টায় ২০-৩০ বার ভেন্টিলেশন হওয়ায় বিমানের কেবিনে রোগের সংক্রমণের ঝুঁকি খুবই কম।

>> তবে বিমানের একই আসন সারির মধ্যে বা পাশাপাশি যদি আক্রান্ত কেউ থাকেন; তাহলে তার হাঁচি বা কাশি বা স্পর্শের মাধ্যমে সংক্রমণ রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ঠিক তেমনই গণপরিবহণ ব্যবহারেও ঘটতে পারে।

সূত্র: বিবিসি

জেএমএস/এমকেএইচ