দেশজুড়ে

সন্তানদের শিক্ষিত করতে দিনমজুর বাবার আকুতি, কুঁড়েঘরে গেল বিদ্যুৎ

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় ২৬ বছর পর বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেন দিনমজুর শফিউল ইসলাম। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বিকেলে তার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়। এসময় রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ তানোর জোনের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জহুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

মুন্ডমালা পৌর এলাকার চুনিয়াপাড়া গ্রামের আজিমুদ্দিনের ছেলে শফিউল ইসলাম খাসজমিতে টিনের একটি ঘর বানিয়ে ২৬ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে অতিকষ্টে স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে বসবাস করছেন তিনি।

বড় ছেলে রবিউল ইসলাম (১৩) পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে আর ছোট ছেলে রাফিউল ইসলাম (৭) প্রথম শ্রেণির ছাত্র। তবে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় তাদের পড়াশোনা করতে কষ্ট হচ্ছিল। শফিউলও অনেক চেষ্টা করেও সংযোগ নিতে ব্যর্থ হন। পরে ডিজিএম জহুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজের অসুবিধার কথা জানালে তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার ব্যবস্থা করে দেন।

২৬ বছর পর বিদ্যুৎপ্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে শফিউল ইসলাম বলেন, ‘দিন আনি দিন খাই। তারপরও বহু চেষ্টা করেছি বিদ্যুতের সংযোগ নেয়ার কিন্তু পারিনি। বহু চেষ্টা করেও যখন বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে ব্যর্থ হই, তখন সরাসরি ডিজিএম স্যারের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানাই। পরে তিনি কোনো টাকা-পয়সা ছাড়াই আমার কুঁড়েঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেন। এমনকি বিদ্যুতের লাইন ও লাইটও লাগিয়ে দিয়েছেন। তার সহযোগিতার কারণে আমার দুই ছেলে খুব খুশি, আমিও অত্যন্ত আনন্দিত।’

Advertisement

শফিউলের স্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় আমার দুই ছেলে তেলের বাতি জ্বালিয়ে পড়ালিখা করতে খুব বিরক্ত হতো। আবার গরমের সময়ও তারা খুব কষ্ট পেত। তবে এখন ছেলেরা বিদ্যুৎ বাতি পেয়ে খুব খুশি। এ বাতিতে তারা খুব ভালোভাবেই পড়াশোনা করতে পারবে। আবার গরমেও তাদের কষ্ট হবে না।’

রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ তানোর জোনের ডিজিএম জহুরুল ইসলাম বলেন, সামান্য আলো প্রাপ্তির কারণে যদি দুটি শিশু সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারে এবং তার দরিদ্র বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে, তবে কেন তাদের সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করব? আমি তাদের সামান্য সহযোগিতা করেছি মাত্র।’

ফয়সাল আহমেদ/এসআর/এএসএম

Advertisement