রংপুরের পীরগঞ্জে প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে একাধিক শিক্ষার্থীকে কৌশলে ফাঁদে ফেলে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে একটি নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধর্মীয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কমিটি।
Advertisement
ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থাপনা কমিটি ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ওই শিক্ষক পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট হাসানপাড়া (বাজারপাড়া) গ্রামের অনিল চন্দ্র মহন্তের ছেলে অনুপ কুমার মহন্ত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান, বেশ কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পীরগঞ্জ উপজেলার ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই ধর্মীয় (কাব্যতীর্থ) শিক্ষক হিসেবে অনুপ কুমার মহন্ত ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন।যোগদানের পর থেকেই তিনি ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ানোর নামে কৌশলে ফাঁদে ফেলে যৌন হয়রানি করেন বলে ১০-১২ জন ছাত্রীর অভিভাবক মৌখিক এবং এক ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দেন। গত ১২ জুলাই জরুরি সভায় ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি। সভায় ওই শিক্ষকও উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
শিক্ষক অনুপ একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক থাকার কথা লিখিতভাবে স্বীকার করলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বলে নিশ্চিত করেন ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম।
তিনি আরও জানান, শিক্ষক অনুপ কুমার তিন-চার মাস আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে একের পর এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের ঘটনা ফাঁস হয়।
এদিকে ওই ঘটনা প্রকাশের পর অভিযুক্ত শিক্ষকের চূড়ান্ত বরখাস্তের দাবিতে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন মণ্ডল বরাবর একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন। স্মারকলিপিতে ওই শিক্ষকের চূড়ান্ত বরখাস্তের দাবি জানানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন মণ্ডল বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক রাশেদুন্নবী তালুকদার বলেন, ওই শিক্ষককে কেন চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয়া হয়েছে।
Advertisement
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক অনুপ কুমার মহন্তের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
জিতু কবীর/এসআর/এমএস