ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের অন্যতম সহযোগী হাজেরা খাতুন ও সানাউল্ল্যাহ নূরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
Advertisement
রোববার (৮ আগস্ট) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে তাদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পল্লবী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বুধবার (৪ আগস্ট) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর পল্লবী থানায় দায়ের করা প্রতারণার মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
Advertisement
এর আগে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ভোরে রাজধানীর গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই দুজনকে আটক করা হয়।
হাজেরা খাতুন ও সানাউল্ল্যাহ নূরীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, স্যাটেলাইট টেলিভিশনের অনুমতি না নিয়েই হেলেনা জাহাঙ্গীরের জয়যাত্রা টিভি ২০১৮ সাল থেকে হংকংয়ের একটি ডাউনলিংক চ্যানেল হিসেবে সম্প্রচার হয়ে আসছিল। যার ফ্রিকোয়েন্সি হংকং থেকে বরাদ্দ করা হয়। ফ্রিকোয়েন্সির জন্য হংকংকে মাসে প্রায় ছয় লাখ টাকা পরিশোধ করতে হতো। হংকং থেকে বরাদ্দ ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশে সম্প্রচারের কোনো বৈধ অনুমোদন নেই।
তিনি বলেন, হাজেরা খাতুন ২০০৯ সালে কুমিল্লার একটি কলেজ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন মিরপুরে একটি গার্মেন্টসে অ্যাডমিন (এইচআর) পদে চাকরি শুরু করেন। তিনি হেলেনা জাহাঙ্গীরের নিকটাত্মীয় এবং একইসঙ্গে কর্মদক্ষতাগুণে হেলেনার অত্যন্ত আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন।
ফলে ২০১৬ সালে তিনি ‘জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন’র ডিজিএম হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর ২০১৮ সালে জয়যাত্রা টিভি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে জিএম (অ্যাডমিন) পদে নিযুক্ত হন। হাজেরা মূলত দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ হেলেনার আর্থিক বিষয়াদি দেখভাল করতেন বলে জানান খন্দকার আল মঈন।
Advertisement
অন্যদিকে সানাউল্ল্যা নূরী সম্পর্কে র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন জানান, নূরী জয়যাত্রা টিভির প্রতিনিধি সমন্বয়ক ছিলেন। তিনি হেলেনা জাহাঙ্গীরের নির্দেশনায় প্রতিনিধিদের সমন্বয় করতেন। প্রতিনিধিদের কেউ মাসিক টাকা দিতে ব্যর্থ হলে বা গড়িমসি করলে তিনি ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন। এলাকায় তার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তিনি গাজীপুর গার্মেন্ট সেক্টরে ব্যাপক চাঁদাবাজি করে তার একটি অংশও জয়যাত্রা টিভিকে দিতেন বলে জানান। এছাড়া তিনি গাজীপুর ও আশপাশের এলাকার অনুমোদনহীন জয়যাত্রা টিভির সম্প্রচার নিশ্চিত করতেন।
জেএ/এমআরআর/জেআইএম