বিশেষ প্রতিবেদন

ভালো নেই মুক্তিযোদ্ধা জয়নব বেগম

মুক্তিযোদ্ধা জয়নব বেগমের বয়স ৮৫ বছর। বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার পৌর এলাকার বাওয়ার কুমারজানি গ্রামে। তিনি বর্তমানে নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত। গত ২৩ নভেম্বর স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। টাকার অভাবে ওই দিন তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার সকালে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক প্রফেসর ডা. শামসুল আরেফিন তাকে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য বলেছেন। তাছাড়া উন্নত চিকিৎসার কথাও বলেছেন বলে জয়নব বেগমের ছোট ছেলে আলী আশরাফ জানিয়েছেন। সম্মানী ভাতা ছাড়া অন্য কোনো আয়-রোজগারের ব্যবস্থা না থাকায় মায়ের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না বলে ছেলে আশরাফ জানিয়েছেন।যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে জানতে চাইলে জয়নব বেগম বলেন, একে একে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়ায় তিনি দারুণ খুশি। তবে তিনি তার জীবন দশায় সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখে যেতে চান।অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া জানা জয়নব বেগমের দুই সন্তান হওয়ার পর ১৯৫৯ সালে স্বামী শামসুদ্দিন মারা যান। পরবর্তীতে তিনি দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে টাঙ্গাইলের দিঘুলিয়ায় বাবার বাড়ি চলে যান। সেখানেই দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি দেশমাতৃকার মুক্তিতে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সুযোগ পাচ্ছিলেন না। একদিন হঠাৎ ডাক পড়ে কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের। তিনি তাকে দায়িত্ব দেন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নগর দলপাই থেকে কালিয়াকৈর উপজেলার গোয়ালবাথান এলাকা পর্যন্ত কতগুলো ব্রিজ এবং কোন ব্রিজে বাঙ্কার রয়েছে, সেই বাঙ্কারগুলোতে কত রাজাকার আল বদর থাকে তার সঠিক তথ্য কাদের সিদ্দিকীকে দিতে। মধ্য যৌবনা জয়নব বেগম জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চাচাতো ভাই প্রয়াত অ্যাডভোকেট সোহরাওয়ার্দীকে সঙ্গে নিয়ে অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই কাদেরীয়া বাহিনী একাত্তরের নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে এক রাতে পাক বাহিনীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য নগর জলপাই এলাকা থেকে গোয়াল বাথান এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের সবগুলো ব্রিজ গুড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। একাত্তরে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নব বেগমের বয়স এখন ৮৫ বছর। তিনি বর্তমানে নানা রকম কঠিন রোগ-ব্যাধিতেও আক্রান্ত। গত ২৩ নভেম্বর স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নেয়া হলে কুমুদিনী হাসপাতালের চিকিৎসক প্রফেসর ডা. শামসুল আরেফিন তাকে নানা প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং উন্নত চিকিৎসার কথা বলেছেন। একমাত্র সম্মানী ভাতা ছাড়া অন্য কোনো আয়-রোজগারের ব্যবস্থা না থাকায় উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি।এসএস/পিআর

Advertisement