মীর রাব্বি একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। ২০০৫ সালে রেডিও টুডে’র মাধ্যমে মিডিয়া অঙ্গনে তার পদার্পণ। ২০০৭ সালে যান এবিসি রেডিওতে। সেখান থেকে যোগ দেন রেডিও স্বাধীনে। কাজ করেছেন ‘জিরো ডিগ্রি’ ছবিতেও। রেডিও থেকে এখন তার পদচারণা নাটক ও সিনেমাসহ টেলিভিশনে উপস্থাপনার মতো মিডিয়ার বিভিন্ন অঙ্গনে।মিডিয়ার ক্যারিয়ার নিয়ে জাগো জবসের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন গোলাম রাব্বী।জাগো জবস : মিডিয়ায় ক্যারিয়ার শুরুটা কখন থেকে?মীর রাব্বি : আমি আসলে অনেক আগে থেকেই মিডিয়ায় ছোটাছুটি শুরু করেছি। যেমন আমার কাজের শুরু ও আজ পর্যন্ত কাজের অভিজ্ঞতা বনাম আমার ব্যক্তিগত বয়স হিসাব করলে অনেকেই বলে ‘আরে ভাই তোমার তো দেখি বয়সের চেয়েও, কাজের অভিজ্ঞতা বেশি’। সত্যি-ই কিন্তু তাই।জাগো জবস : আর রেডিওতে?মীর রাব্বি : রেডিওতে যাত্রা ২০০৫ সাল থেকে। যখন রেডিও টুডে যাত্রা শুরু করল। শুরুটা হয়েছিল আউট-ডোর ব্রডকাস্টার হিসেবে। তখন আমি স্টেশনের বাইরের বিভিন্ন ইভেন্ট কাভার করতাম আর রাস্তা থেকে শ্রোতাদের ট্রাফিক আপটেড দিতাম। এরপর ২০০৭ সালে এবিসি রেডিওতে প্রোডিউসার ও আরজে হিসেবে যাত্রা। সেখান থেকে রেডিও স্বাধীন।জাগো জবস : ‘বয়সের চেয়েও, কাজের অভিজ্ঞতা বেশি’-কেন এমনটা বলা হয়?মীর রাব্বি : আমি ছোটবেলা থেকেই থিয়েটার করতাম। পঞ্চম শ্রেণিতে বসেই আমি মঞ্চ নাটকে অভিনয় করি। আমার ছবি আঁকার প্রতিও ব্যাপক ঝোঁক ছিল। আবৃত্তি করতাম। গণশিল্পী আর উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলাম।জাগো জবস : রেডিওতে কাজ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে মজার বিষয় কোনটি?মীর রাব্বি : আমি মূলত অ্যানটিক, ঐতিহ্যগত এবং পুরাতাত্ত্বিক জিনিসের খুব ভক্ত। যেমন আগে সবাই দেখতাম চিঠি লেখায় আর পাওয়ায় ব্যাপক রোমাঞ্চিত হতো। তেমনি রেডিওতে কিন্তু ওই ব্যাপারটি রয়েছে; অন্য কেউ আমাকে লিখবে, আমি আমার শ্রোতার লেখা ও তার অনুভবের সঙ্গে তাল মিলাতে পারব, এ অনুভূতিটিই সবচেয়ে মজার। কেননা রেডিওতে এসএমএস পত্রালাপের মাধ্যমে সবার সুখানুভূতি শেয়ার করার এক অনন্য সুযোগ থাকে।জাগো জবস : রেডিওর পাশাপাশি অন্য কাজ করলে কোনো বাধা সৃষ্টি হয় না?মীর রাব্বি : আমার কাছে কোনো বাধা মনে হয় না। কেননা প্রত্যেকটির মধ্যে একটা মিল রয়েছে; সেটা হল প্রত্যেকটা কাজই ক্রিয়েটিভ আর যেখানে নিজের সৃষ্টিশীলতাকে অনেক কাজে লাগাতে হয়।জাগো জবস : রেডিও জগতে আপনার প্রতিষ্ঠান কতটা ভিন্ন?মীর রাব্বি : আমরা মূলত চাই প্রত্যেকটা মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকতে। লিসেনারদের পছন্দ-অপছন্দকে দাম দিতে। কখনোই শ্রোতাদের আবেগ-অনুভূতি ব্যবহার করে সস্তা জনপ্রিয় হওয়ার ইচ্ছা নেই আমাদের।জাগো জবস : ক্যারিয়ার হিসেবে রেডিওতে চাকরি কেমন?মীর রাব্বি : খুবই ভালো। চাকরিটা কেউ ইচ্ছে করলে পার্ট টাইমও করতে পারে। বেতনের চেয়েও সবচেয়ে বড় হল অন্য চাকরির মধ্যে ধরন-ধারণে এর ভিন্নতা। এখানে বহু পদ রয়েছে- রেডিও জকি (আরজে), প্রোডিউসার, স্ক্রিপ্ট রাইটার, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার, এইচআর ম্যানেজার, মার্কেটিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স ম্যানেজারসহ অনেক পদেই চাকরির সুযোগ রয়েছে। একটি কথা গণমাধ্যম বিশেষ করে মিডিয়ার এসব লাইনে যারা কাজ করেন, এরা বেশিরভাগই কিন্তু ফ্যাশন বলেই কাজ করতে আসেন।জাগো জবস : এ অঙ্গনে জনবল নিয়োগে আপনাদের পদ্ধতিটা কেমন?মীর রাব্বি : শুরুতে অন্য চাকরির মতোই নিয়োগ বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এরপর প্রাপ্ত সিভি থেকে অডিশন নেওয়া হয়। একটা জিনিস বলে রাখি, সিভি বাছাইয়ের সময় আমরা দেখি কালচারাল অঙ্গনে প্রার্থীর চলাফেরা কেমন, পদ সম্পর্কিত পড়ালেখা বা প্রশিক্ষণ আছে কিনা। অডিশনে ভয়েস রেকর্ড করার পর বোর্ড থেকে শোনা হয়। কখনো কখনো কোনো রেডিও লিখিত পরীক্ষাও নিয়ে থাকে। এসব পরীক্ষায় সর্বদা জেনারেল নলেজ, গান ও গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট জ্ঞানের গভীরতা, আইকিউ ও সেন্স অব হিউমার কেমন তা পরীক্ষা করা হয়।জাগো জবস : রেডিওতে যারা কাজ করতে চান, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ-মীর রাব্বি : রেডিওতে কাজ করতে চাইলে প্রথমেই ঠিক করা উচিত আপনি কি আরজে বা প্রোডিউসার হতে চাচ্ছেন নাকি অন্য পদগুলোতে কাজ করতে চাচ্ছেন। যদি ভয়েস রিলেটেড কাজ করতে চান, তাহলে অবশ্যই ভালো ভাষাজ্ঞান আর আইকিউটা থাকা দরকার। এ সবের জন্য ডিবেট, আবৃত্তি, গান, নাচ বা কালচারাল যেকোনো বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা জরুরি। নিতে পারেন সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণও।জাগো জবস : মূল্যবান পরামর্শ দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।মীর রাব্বি : জাগো নিউজের জন্য শুভকামনা।এসইউ/পিআর
Advertisement